ডিএনডি জলাবদ্ধতা নিরসনে ভাবছেন শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, ডিএনডি জলাবদ্ধতা নিরসনে নারায়ণগঞ্জের সবগুলো সরকারি দপ্তরের সমন্বয়ের দরকার। বিচ্ছিন্নভাবে সমস্যার আংশিক সমাধান হবে, পুরোপুরি সমাধান হবে না। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজকে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আগামী রবিবার সরেজমিনে দেখতে আসবেন। তিনি আসার আগে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বুধবার ডিএনডি ও এর বাইরে যেসব এলাকায় জলবদ্ধতা হচ্ছে সে বিষয়ে সমাধান কীভাবে করা যায় তা নিয়ে আমরা বসবো। আমাদের পরবর্তী সভায় এই জলাবদ্ধতা নিরসনে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তাতে করে আগামী শীত মৌসুম পরে এরকম পরিস্থিতি নিয়ে আর কোনো সভা করতে হবে না। আমি আশা করি এই রবিবারে একটি সিদ্ধান্ত দিতে পারবো। তিনি সভায় সাংবাদিকদেরও থাকতে বললেন। তাদের সহযোগিতাও চেয়েছেন। ৪ঠা জুলাই রবিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জলাবদ্ধতা নিরসন নিয়ে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) প্রকল্পটি ১৯৬৪-৬৮ সালে যখন তৈরি করা হয়েছিল তখন অনেক উন্নত ছিলো (বেহেশতের টুকরো )। কিন্তু এখন তা মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফতুল্লার লালপুর অভিশপ্ত এলাকা হয়ে গেছে। জায়গাটা হল নিচু এবং পানি বের হওয়ার যে রাস্তাগুলো আছে সেগুলো উচু। নিচু জায়গা থেকে তো পানি আর উচু জায়গায় যেতে পারবে না। ফলে র্দীঘ সময় ধরে জলাবদ্ধতায় আটকে থাকতে হচ্ছে মানুষকে। জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন ডিএনডির উন্নয়ন প্রকল্পের প্রজেক্ট ডিরেক্টর লেঃ কর্ণেল আহসানউথ তাকবিম চৌধুরি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সহ জনপ্রতিনিধিরা।

জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি থাকায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি মনে করি এই জলাবব্ধতার সমস্যা আমার ব্যর্থতা। এ জন্যে আমার এলাকার ভুক্তভোগী যারা আছেন তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ক্ষমা চাওয়াতে আমার কোনো লজ্জা নাই কারণ আমি সমস্যাটা সমাধান করতে পারি নাই। কিন্তু এটা সত্য যে এ সমস্যা সমাধানে আমাদের কোনো অতিরিক্ত মেশিনারিজ এবং অতিরিক্ত বাজেট নাই। যেটুকু আনা সম্ভব ছিলো তার থেকে বেশি আমি নিয়ে এসেছি। এখন যতটুকু করা দরকার তাও আমরা করবো। আমি ২০ দিন ছিলাম না। আমি আমেরিকাতে গিয়েছিলাম সঙ্কটাপন্ন থাকা আমার শ্বশুরকে দেখতে। দেশে ফিরেই সভার আয়োজন করতে বলেছি। মূলত বিভিন্ন সরকারী দফতর যারা সংশ্লিষ্ট তাদের সমন্বয়হীনতার কারণে অনেক স্থান হতে পানি সরতে পারছে না।

তিনি বলেন, লিংক রোডের কাজের জন্য প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তায় আমরা বালু ভরাট করছি। ওই আট কিলোমিটার রাস্তায় ডিএনডির যে খালগুলো তাদের কোন সংযোগ আছে কী না আমরা তা জানি না। কুতুবপুরে ওয়াসার পাশে আমাদের একটা রাস্তা আছে। আগে সেই এলাকায় প্রতি বর্ষায় ওয়াসা দশটি করে অস্থায়ী পাম্প বসাতো। এখন ঢাকা সিটি করপোরেশন ওয়াসার দায়িত্ব নিয়েছে। ফলে সেই পাম্পটা এখন চলছে না। তাদের সাথে আমার কথা হয়েছে। আশাকরি তারা সেই পাম্পগুলো চালু করে দেবেন।

শামীম ওসমান বলেন, আমার প্রশ্ন গত বছর বৃষ্টিতে তো এমন বাজে অবস্থা হয়নি। এবার এমন এতো বাজে অবস্থা। সিটি করপোরেশন এলাকার পানিটা গোরস্থানের দিক দিয়ে এসে ফতুল্লা গাবতলী হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। সেটা যেখান দিয়ে বের হওয়ার কথা সেই জায়গাটা আটকে যাচ্ছে এবং এইসব এলাকার মানুষ পানিতে ভাসছে। সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাতে আমি কোন ড্রেন করতে পারছি না। কারণ সেটা সিটি করপোরেশনের।  দুই বছর আগে জালকুড়িতে সিটি করপোরেশনকে ডাম্পিং করার জন্য জায়গা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। যেন সেখানে ময়লা ফেলে তা দিয়ে ইলেক্ট্রিসিটি উৎপাদন করা যায়। জালকুড়ির মানুষের চরম আপত্তির পরেও জেলা প্রশাসন ওই জায়গা বরাদ্দ দেন। আজ পর্যন্ত সেই কাজের কোন অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি। ময়লাটা ফালানো হচ্ছে লিংক রোডের পাশে।

add-content

আরও খবর

পঠিত