নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝুঁকি নিয়ে ফেরি পারাপার হচ্ছে যানবাহন। গত কয়েক দিনে বর্ষনে শীতলক্ষ্যা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে ফেরি ঘাটের গ্যাংওয়ে ডুবে গেছে, জরাজীর্ণ পল্টুনে পানি ঢুকে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ফেরি দিয়েই পারাপার হচ্ছে ছোট-বড় যানবাহন। হাটু থেকে কোমড় পর্যন্ত পানি দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে যানবাহন পানিতে আটকা পড়ে গেছে। ঘাটের দুটি ফেরি রয়েছে।
আর দুটি ফেরিতে দুটি করে চারটি ইঞ্জিন রয়েছে কিন্তু চারটি ইঞ্জিনের মধ্যে দুটি ইঞ্জিন প্রায় সময়ই বিকল থাকে। ইঞ্জিন বিকলের কারণে প্রায় সময়ই ঘন্টার পর ঘন্টা আটকা পড়ে থাকতে হয় যানবাহনগুলো। ফলে ফেরির দুই পাড়েই সৃস্টি হয় দীর্ঘ যানজট। প্রতিদিন দেশের প্রায় ১৭টি জেলা থেকে আগত যাত্রীরা শীতলক্ষ্যা নদীর এ ফেরি দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্রগ্রাম সড়ক যোগে আসা প্রায় ১৭টি জেলার সাধারণ যাত্রীরা মুড়াপাড়া-রূপগঞ্জ সদর এলাকার শীতলক্ষ্যা ফেরি যোগে পারাপার হয়ে এয়ারপোর্টসহ রাজধানীতে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে কুমিল্লা, দাউদকান্দি, চাঁদপুর, মতলব, নোয়াখালী, ফেনি, চট্রগাম, হবিগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, মৌলিবাজার, আশুগঞ্জ, সুনামগঞ্জের যাত্রীরা এ পথ ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া ভুলতা ফ্লাইওভারের কাজ চলাচলের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে না গিয়ে ফেরি পথ ব্যবহার করছে অনেক যানবাহন।
অল্প সময়ের মধ্যে রাজধানীতে প্রবেশ পথ হিসেবে যাত্রীসাধারন শীতলক্ষ্যা নদীর উপর দিয়ে ফেরি যোগে চলাচল করে থাকেন। প্রতিদিন হাজার হাজার যানাবাহন চলাচল করে এ পথ দিয়ে। দুটি ফেরি প্রতি বছর ইজারা দিয়ে থাকেন বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। ফেরি দুটির রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে থাকেন সড়ক ও জনপদ বিভাগ। বর্তমানে ফেরির দায়িত্বে রয়েছেন সুমন এন্টার প্রাইজের মালিক সমর আলী সরদার।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নদীর দুই পারের ফেরি লাগানো গ্যাংওয়ে ও পল্টুনের বিভিন্ন অংশ জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। ষ্টীলের সিট গুলো খসে পড়ছে। পল্টুনের ভিতর পানি ঢুকে ডুবে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। অনেক সময় সেলু মেশিন দিয়ে সেচেও পানি কমাতে হচ্ছে। ফেরিঘাটের দুই পাড়ই অতিরিক্ত ঢালও হওয়ায় অনেক সময় গাড়ি উঠতে বা নামতে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ছে। দুটি ফেরির মধ্যে একটি ফেরি প্রায় ২৮ বছর আগের, অপরটিও একই সময়ের। ইঞ্জিন ও ফেরির বডি মেরামত করে এখন পর্যন্ত চালানো হচ্ছে ওই দুটি ফেরি।
এসব সমস্যা নিয়ে ইজারাদাররা কর্তৃপক্ষকে জানালে তেমন কোন কাজ হয়না বলে জানান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। সুমন এন্টার প্রাইজের মালিক সমর আলী সরদার বলেন, আমরা এসব সমস্যার ব্যপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের জানালে তারা এসে কাজ করে দিয়ে যায় কিন্তু ফের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে ফেরির ইঞ্জিন সচল থাকলেও গ্যাংওয়ে ডুবে যাওয়ায় বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। গ্যাংওয়ে উপরে উঠিয়ে দিলে ভোগান্তিটা কমে যাবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদের বিভাগের এসডি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ফেরির সমস্যা হলে সমাধানও করা হয়। এখন যে সমস্যা রয়েছে, তা সমাধান করা হবে।