নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জে ৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশকে কেউ তলাবিহীন ঝুড়ি বলতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশ অকেন দূর এগিয়ে গেছে। তিনি শুধু বাংলাদেশের নেত্রী না। সারা বিশ্বের নেত্রী হিসেবে পরিচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আগামী ৫ বছর ক্ষমতায় থাকলে দেশ ২৫ বছরের জন্য এগিয়ে যাবে। তিনি শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছেন। শ্রমিকদের কোন কিছু বলার আগেই তিনি সকল সমস্যার সমাধান করে ফেলেন।
৭ জুলাই শনিবার দুপুরে সেন্ট্রাল খেয়াঘাটে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপাড়ে ময়মনসিংহপট্টিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বন্দরে মহিলা শ্রমজীবী হোস্টেল এবং ৫ শয্যা হাসপাতালের সুবিধাসহ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের উদ্ধোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নু।
সেলিম ওসমান বলেন, উন্নয়ন নিয়ে কোন রাজনীতি নেই। উন্নয়নের স্বার্থে আমরা সকলেই এক। আমার চাচা শুক্কর মাহমুদ আমার হাত ধরে বলেছেন উন্নয়নের স্বার্থে তিনি এক হয়ে কাজ করবেন। আমরা একসাথে ঐক্যবদ্ধ আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একটানা কাজ করতে চাই। অনেকে বলেন নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন চোখে পড়ে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ২০২১ সালের নারায়ণণগঞ্জকে প্রাচ্যের ডান্ডি রূপ ফিরিয়ে নিয়ে আসবো। শ্রমিকদের আমি অর্থনৈতিক মুক্তিযোদ্ধা মনে করি। নারায়ণগঞ্জে উন্নয়ন হবেই। আমরা চাচা-ভাতিজা এক হয়েছি। আমরা উন্নয়নের রাজনীতি করবো।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জকে আধুনিক শিল্পনগরী গড়ে তোলার জন্য হাজার কোটি টাকা খরচ করে প্রধানমন্ত্রী আমাদের নারায়ণগঞ্জে ৪ স্থাপনা দিয়েছেন। যার মধ্যে চাষাঢ়ায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হওয়া কল, কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর আমরা ইতোমধ্যে উদ্বোধন করেছি। আজকে বন্দরে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ শয্যার হাসপাতালের সুবিধা সংবলিত ৮ তলা শ্রমজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হলো। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চাষাঢ়ায় শ্রমিকদের জন্য ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০০ শয্যা একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মান কাজ শুরু হবে। যেটি সরকারী অর্থায়ন ও পিপিপির মাধ্যমে হাসপাতালটি নির্মান করা হবে। এরপর চাষাঢ়া শহীদ মিনারের পেছনে শ্রম অধিদপ্তরের নতুন ভবন নির্মান করা হবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ৬৮ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়ে ছিল। খুব শীঘ্রই উনার নির্দেশনা অনুযায়ী একটি পরিবারে চলাফেরার করার মত নতুন বেতন ঘোষণা দেওয়া হবে। আমরা শ্রমিকদের উৎসব ভাতা প্রদান আইন করে ভাতা প্রদান করছি। নরসিংদীতে একটি অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আমরা শ্রমিকদের ১ লাখ টাকা করে নিহত শ্রমিকের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরন দিয়ে ছিলাম। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রুপ ইন্সুরেন্সের মাধ্যমে প্রতিটি শ্রমিকের মৃত্যুতে আমরা তার পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে প্রদান করছি। এখন পর্যন্ত আমরা ২১ কোটি ৫১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা প্রদান করেছি। বিকেএমইএ এর মাধ্যমে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করছি। গত ৩বছরে ৩ হাজার দক্ষ শ্রমিক তৈরি করতে পেরেছি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতি শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের দৃষ্টি আকর্ষন করে তিনি আরো বলেন, আজকের সভাপতির কাছে আমার অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা নারায়ণগঞ্জের সকল সংসদ সদস্য, মেয়র সহ জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা লিখিতভাবে দাবী করে ছিলাম বন্দরের শান্তিরচরে প্রায় ১৫০০ একর জমিতে নীটপল্লী নির্মাণ করার। এটা নির্মাণ হলে নারায়ণগঞ্জে ২০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে। এমন আরো অনেক উন্নয়ন আছে যার জন্য আমি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছি। আজকে আমার চাচা আমার হাত ধরেছেন। আজকে থেকে নারায়ণগঞ্জে আর কোন রাজনীতি নেই আজকে থেকে হবে উন্নয়নের নারায়ণগঞ্জ। আর যে সকল তৃতীয় পক্ষ পেছন থেকে আরএমজি শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারা দেশদ্রোহী। শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমাদের সাথে আছে বিকেএমইএ দরজা খোলা আছে কোন প্রয়োজন হলে বিকেএমইএ সাথে যোগাযোগ।
কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি শুক্কর মাহমুদের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসেনে আরা বাবলী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবু জাহের, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হকে নিপুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও সরকারী কর্মকর্তারা।