হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী শাহী মসজিদ পুকুরটি

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর প্রতিনিধি ) : কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে বন্দর শাহী মসজিস্থ মুঘল আমলের ঐতিহ্যবাহী শাহীমসজিদ পুকুরটি। নাসিক ২১নং  ওয়ার্ড শাহী জামে মসজিদ সংলঘœ ঐতিহ্যবাহী এ পুকুরটি যেন পরিনত হয়েছে এখন ময়লা-আর্বজনা ফেলার ভাগাড়ে। আক্ষেপ করে এমনই অভিযোগ করেন শাহীমসজিদ এলাকার সাধারন জনগোষ্ঠী।

তথ্য সুত্রে জানা গেছে, ১৪৮২ খ্রীস্টাব্দে (৮৮৬ হিজরী) মোতাবেক এ মসজিদের বয়স প্রায় সাড়ে ৫শত বছর। মুঘল আমলের অত্যন্ত পুরনো মুসলমানদের একটি এবাদতের স্থান। এ মসজিদে প্রতিদিন শাহীমসজিদ এলাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত আগত মুসল্লীরা নামায পড়তে আসেন। এই প্রাচীন মসজিদের স্থপতি হাজী বাবা সালেহ। তিনি ছিলেন মক্কার উচ্চ বংশীয় একজন মহাজের। সুলতান জালাল উদ্দিন ফতেহশাহর রাজত্বকালে তিনি রাজপদ র্কমচারী ছিলেন। মসজিদটি ইট চুনা সুরকী দিয়ে বানানো। এরই দক্ষিণে রয়েছে চতুর্ভূজী একটা ঐতিহ্যবাহী পুকুর যা মসজিদ আওতাধীণ। পুকুরটিতে চর্তুদিকে সিড়িঘাট বেষ্টিত রয়েছে।

এখন সেই ঐতিহ্যবাহী পুকুর তার অস্তিত্ব যেন ক্রমেই বিলুপ্তির পথে। অযতেœ অবহেলায় এখন তার ঐতিহ্য হাড়িয়ে নর্দমা ফেলার উপযুক্ত স্থান হয়ে দাড়িয়েছে। যদিও স্থানীয় এলাকাবাসী একাধিকবার ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকারকে পুকুর সংস্কার বিষয়ে আবেদন করলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে ইতিপূর্বে নাসিকের বছরপূর্তী কোন এক অনুষ্ঠানে মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি সিটি কর্পোরেশন আওতাধীণ উন্নয়ণমুলক কর্মকান্ডের এক খসড়ায় ২১নং ওয়ার্ড শাহীমসজিদের ঐতিহ্যবাহী এ পুকুরটি আধুনিকায়নের কথাও লিপিবদ্ধ করেছিলেন। তিনি মুঘল আমলের এ পুকুরটির প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রাখতে পুকুর খনন করে এর চতুর্দিকে লেক করে দিবেন বলে জানা গেছে। তবে মেয়র আইভির উন্নয়ণমুলক সূদুরপ্রসারী এ অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করার লক্ষ্যে এক শ্রেনীর চাটুকারদের ইন্ধনে পুকুরটির এক পাশ দিয়ে ময়লা-আর্বজনা ফেলে ধীরে ধীরে ভরট করার অপচেষ্টা করছে।

বন্দর শাহী মসজিদ কমিটির সভাপতি আবুল জাহেরের সাথে ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি আংশিক দখল ও সংকোচিত হওয়ার বিষয়ে মোবাইল ফোনে একাধিকবার আলাপ করার চেষ্টা করলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে বন্দর শাহীমসজিদ এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী চাটুকাররা এ প্রাচীন পুকুরটিকে এক সময় বালু দিয়ে ভরাট করে স্থাপনা তৈরী করে বানিজ্য করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু তারা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এলাকাবাসী তাদের বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিল বের করেছিল। এখনও তারা এ পুকুরটি ভরাট করার নেশায় মত্ত হয়ে আছে। তাদের ইন্ধনে পুকুরের আশপাশের বাড়ী ঘরের সমস্ত ময়লা-আবর্জনা এখন পুকুরের এক পাশে ফেলে ময়লার ভাগাড়ে পরিনত করছে। অথচ পুকুরের এ পথ দিয়েই শিক্ষার্থীরা তাদের বিদ্যাপিঠে নাক চেপে যেতে হয়। মুসল্লীরা এ পথ দিয়ে মসজিদে যায় থুথু ফেলে।

তারা আরো জানান, শাহীমসজিদ পুকুরের সিমানা ঘেষা বাড়ীর কতিপয় মালিকরাও এ সুযোগে পুকুর আংশিক দখল করে বাড়ী নির্মান করছে। রহস্যজনক কারনে শাহীমসজিদ কমিটির কর্তাবাবুরা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালণ করছে। মোঘল আমলের ঐতিহ্যবাহী শাহীমসজিদ পুকুরটি দ্রুত সংস্করন করতে ও স্থানীয় অর্থলোভী প্রভাবশালী চাটুকারদের কবল থেকে মুক্ত করতে মাননীয় মেয়র ডাক্টার সেলিনা হায়াত আইভির সু-দৃষ্টি কামনা করছে এলাকাবাসী।

add-content

আরও খবর

পঠিত