নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিনিধি ) : গতানুগতিক নিয়ম থেকে বেরিয়ে এসে বিজয় দিবসের আনন্দ উদযাপনে ভিন্নতা আনার পরামর্শ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে তিনি উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণের সুযোগ রেখে মাসব্যাপী ক্রিকেট, ফুটবল, কাবাডি, হাডুডু সহ বিভিন্ন খেলার মধ্য দিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগীতার আয়োজন করার প্রস্তাব করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বন্দর উপজেলার সম্মেলন কক্ষে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের দিন শিক্ষার্থীদের মাঝে বির্তক, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা সহ বিভিন্ন ইভেন্টে প্রতিযোগীতার আয়োজন করা যেতে পারে। আর এসব কিছু শুধুমাত্র বিশেষ দিন গুলোতেই নয় সারা বছর জুড়েই যেন আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়। সমরক্ষেত্র বিশাল একটি মাঠ নির্মাণ করা হয়েছে। সারা বছর জুড়েই সেখানে এসব খেলাধূলার আয়োজন করা যেতে পারে। তবে বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে যাতে কোন প্রকার চাঁদাবাজি না হয় ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান রাখেন।
এছাড়াও বন্দরের বিভিন্ন এলাকার বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন্দরে বিভিন্ন স্থানে বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে দ্রুত ওই সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ রাখেন। সেই সাথে যে সকল এলাকায় যাতায়াতের রাস্তাঘাটের সমস্যা রয়েছে সেগুলো ওই এলাকার চেয়ারম্যান ম্বেম্বার সহ উপজেলা প্রকৌশলী সরেজমিনে পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি কমল খান বক্তব্যে বন্দরে মাদকের সয়লাব ও প্রশাসনিক অভিযান আরো বৃদ্ধি করার কথা উল্লেখ করেন। পরিপ্রেক্ষিতে সেলিম ওসমান বলেন, মাদক আমাদের সমাজে একটি মারাত্মক সমস্যা। কিন্তু এটি নিয়ে যত বেশি প্রচার করা হবে তত বেশি প্রসার ঘটবে। থানা পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করছে। বেশ কয়েকটি অভিযানে বিপুল পরিমান মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এজন্য আমি পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ ও সাংবাদিকদের অনেক ভূমিকা রাখতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখায় মাদক সেবনকারী খুচরো বিক্রেতারা গ্রেপ্তার হচ্ছে কিন্তু প্রকৃতভাবে যারা এটাকে প্রবেশ করাচ্ছি সেই ব্যবসায়ী অন্তরালে থেকে যাচ্ছে। তারা কারা খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাদের পেছনের শক্তিটা কি? তারা হয়তো কারো না কারো কাছ থেকে শেল্টার পাচ্ছে। আমি বা আমরাই তাদেরকে পেছন থেকে শক্তি জোগাচ্ছি। এই সব কিছু খুঁজে বের করতে হবে। মাদক ব্যবসায়ী যেই হোক সে সমাজের শত্রু তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। আর পুলিশ যদি কোন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেন এবং তার জন্য যদি কোন জনপ্রতিনিধি সুপারিশ করতে যান তাহলে আপনারা সাংবাদিকেরা সেটা ফলাও করে প্রচার করবেন।
আর মাদকের ছোবল থেকে নতুন প্রজন্মকে দূরে রাখতে হলে মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে তাদের বুঝাতে হবে। তারা কেন মাদকাশক্ত হচ্ছে সেই কারণ খুঁজে বের করতে হবে। তারা হয়তো বিষন্নতা থেকেই মাদকে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের বিষন্নতা দূর করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে লেখাপড়ার বাইরে খেলাধূলা, বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ব্যস্ত রেখে আনন্দ করার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তাহলে দেখা যাবে তারা মাদকে আকৃষ্ট হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাদক নিয়ে কোন বক্তব্য রাখতে হবে না।
বন্দর উপজেলার নির্বার্হী কর্মকর্তা পিন্টু বেপারীর সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিনা শবনম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস আরা বেগম, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ.ক.ম নুরুল আমিন, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন সহ অন্যান্যরা।