নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন ) : শহরের চাষাড়া থেকে ২নং রেল গেইট র্পযন্ত যানজট এখন নগরবাসীর চিরচেনা রূপ। মাত্র কয়েক মিনিটের এ সড়ক চলতে এখন আধঘন্টা লেগে যায়। বাধ্য হয়ে বিকল্প শাখা সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে সেখানেও বাঁধার মুখে পড়ে মানুষ। এমনই একটি মীর জুমলা রোড। এ সড়কটি বঙ্গবন্ধু সড়ক ও সিরাজদ্দৌলা সড়কের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। কয়েকবার দখলমুক্ত করলেও এ সড়কটি এখনো বেদখলেই আছে। একদিকে ময়লা অপরদিকে দোকানদারদের দখলবাজির কারনে এ সড়কটি মানুষর জন্য অলিখিতভাবে বন্ধ রয়েছে। যে কারনে ভোগান্তিতে পড়তে হয় আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষের।
সূত্র মতে, শহরের দিগুবাবুর বাজারের ভেতর দিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডের অবস্থিত মীর জুমলা সড়ক। এ সড়কের এক প্রান্তে শহরের মূল সড়ক অপর প্রান্তে নারায়ণগঞ্জ কলেজ, নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল, টেলিফোন ভবন, রেল স্টেশন, লঞ্চঘাটসহ অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সরেজমিনে দেখা যায়, এ সড়ক দখল করে পিয়াজ, মরিচ, মাছ, মুরগী, ডিম, গরুর গোশত, তরিতরকারি, কাঁচামাল, মুদিসহ বিভিন্ন ধরনের পন্য বিক্রি করছে বিক্রেতারা। এ সড়কের পাশের ইনস্টিটিউট সড়কটিও দখল করে রেখেছে তারা। এছাড়াও এ সকল সড়কের পাশে যে সমস্ত দোকান রয়েছে তারাও মালামাল রেখে অর্ধেকের বেশি দখল করে রাখে। এর ফলে এ সড়কে কোন রিকশা কিংবা যান চলাচলতো করতে পারেইনা এমনকি মানুষও হাটতেও পারে না। দোকানিদের বর্জ্জের কারনে বৃষ্টি না এলেও সড়কটি সব সময় থাকে কর্দমাক্ত।
দেওভোগ এলাকার গৃহিণী সেলিনা বেগম জানান, মেয়েকে নিয়ে কলেজে যেতে প্রতিদিন যানজটে পড়তে হয়। এ সড়কটি যদি উপযোগী থাকতো তবে হেটেই যেতে পারতাম। এখানে হাটতে গেলে ময়লা পায়েতো লাগেই কাপড়েও লেগে যায়। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, সড়কের মধ্য অংশ জুড়ে কিছুটা ফাকা অংশ থাকলেও বাজারের পচা, ময়লা-আবর্জনার কারণে তাও অনুপযোগী। অন্য অংশে দোকানীদের মালামাল । যে কারণে এ সড়ক দিয়ে এখন আর স্বাভাবিকভাবে চলাচল করা যাচ্ছে না। দুই একটা রিকশা প্রবেশ করলেও দোকানীদের তোপের মুখে পড়তে হয় তাদের।
আব্দুল সামাদ নামের এক ব্যক্তি ক্ষুব্দ কন্ঠে বললেন, এটাকে সড়ক কিভাবে বলা যায়, যেখানে রয়েছে ময়লার স্তুপ, আর সড়কে রয়েছে নোংরা ময়লা যুক্ত কাদা। এটা কি কখনও স্বাভাবিক চলচলের স্থান হতে পারে? সড়কটিকে ডাস্টবিন ছাড়া আর কিছু বলতে চাই না। তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন, সড়কই যদি করা হলো তবে চলাচল কেন করতে দেয়া হবে না। তাহলে সড়ক না করে দোকানীদের জন্য মার্কেট করে দিলেই হতো !
এ ব্যাপারে ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস বলেন, আমাদের সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এ রাস্তাটি চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছিল। তবে নগরীর অন্যতম এই দিগুবাবুর বাজারে বেশি আবর্জনা হওয়ায় এখান থেকে পুরো আবর্জনা অপসারণ সম্ভব না হওয়ায় ময়লার স্তুপ জমে বিশাল আকার ধারণ করেছে। এছাড়া আমরাও চাই এটা অন্তত রিকশা চলাচলের উপযোগী হউক। হকারদের যেমন আমরা না চাইলে ফুটপাত দখল করে রাখে। ঠিক তেমনি মীর জুমলা সড়কটিও তাদের দখলে চলে যায়। সকালে আসলে এর আসল চিত্র ফুটে আসে। তবে এটাকে মেইনটেইনস করা খুবই ডিফিকাল্ট। কিন্তু এটাকে সচল করার জন্য খুব শিঘ্রই আমরা ব্যবস্থা নিবো।
স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, দীর্ঘ ২০ বছর এ সড়কটি অবৈধ দখলদারদের কবলে ছিল। প্রায় ৮ বছর আগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে মীর জুমলা সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী করা হলেও তবে ধীরে ধীরে আবার পুরনো রূপে ফিরে গেছে। সড়কের সবজি বাজারের সামনে উঁচু করে ময়লার স্তুপ রাখা হয়েছে। যা বর্তমানে পথচারীদের জন্যও চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট র্কতৃপক্ষের উদাসিনতায় হতাশ নগরবাসী। সচেতন মহলের অভিযোগ শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে এ সড়কটি বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এফ.এম এহতেশামূল হক বলেন, বিষয়টি আমাদের নলেজে আসলো। এটা রেগুলার আমাদের মনিটরিংয়ের আওতায় আনছি। তবে সিটি করপোরেশনের লোকবলের সল্পতা রয়েছে। তারপরেও এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করবো। এবং দ্রুতই এর একটি সমাধান হবে।