মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাবে নারায়ণগঞ্জ স্মৃতিসৌধ

নারায়ণগঞ্জ র্বাতা ২৪ (সৈয়দ সিফাত লিংকন) : ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর। বন্দর উপজেলার রেলস্টেশন সংলগ্ন এই স্থানেই পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের সর্বশেষ যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। রক্তক্ষয়ী ওই যুদ্ধে শহিদ হন ভারতীয় মিত্রবাহিনীর ১১ সদস্য । পরে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ আক্রমণে পালিয়ে যায় পাক বাহিনী ও তাদের দোসররা।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে নামকরণ হয় সমরক্ষেত্র। এবার সব শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং আগামী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে নির্মিত করা হলো নারায়ণগঞ্জ স্মৃতিসৌধ।২২ জুলাই শনিবার বিকালে বন্দর উপজেলার সমরক্ষেত্র প্রাঙ্গণে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে নির্মিত নারায়ণগঞ্জ স্মৃতিসৌধের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক।

জানা গেছে, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস এখানে প্রদর্শিত হবে। এ স্মৃতিসৌধের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে। এখানে বঙ্গবন্ধু গ্রন্থাগার এবং জাদুঘর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বছর ১৯৭১ সালকে প্রাধান্য দিয়ে স্মৃতি সৌধটির উচ্চতা করা হয়েছে ৭১ ফুট। আর সি সি ঢালাইয়ের ১৩টি পিলারের সমন্বয়ে এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে করা হলেও এর আকৃতি তার চেয়ে কিছুটা ছোট।

আরো জানা যায়, স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধাদের দাবীর প্রেক্ষিতে এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগে এগিয়ে আসেন সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক এবং পদোন্নতিপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. মঞ্জরুল হাফিজ। তাকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তিনি তার নিজস্ব তহবিল থেকে ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে জলাশয় ভরাট ও দেয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করেন। যা পরবর্তিতে জেলা প্রশাসন এবং সকলের যৌথ সহযোগীতায় এখন দৃশ্যমান রূপ নিয়েছে। আর এই উদ্বোধনের মাধ্যমে স্বাধীণতার ৫৩ বছর পর একটি স্বপ্ন উঁিক মেরেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পদোন্নতিপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার এবং সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মাদ আলী, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল হাই, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ, বন্দর উপজেলার সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজি নাসির, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকমর্তা কুদরতে খুদাসহ জেলা ও উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

এদিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে নবনির্মিত বন্দরের স্মৃতিসৌধের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জানায়, স্মৃতিসৌধের পুরো কাজ শেষ হতে আরও ছয়মাস সময় লাগবে। এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের বদলি হওয়ায় তিনি তরিগরি করেই এর উদ্ধোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ জেলার মুক্তিযোদ্ধারা।

add-content

আরও খবর

পঠিত