আমার প্রথম চয়েজ ছিলো পুলিশ : এডি.এসপি নাজমুল

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( শহর সংবাদদাতা ) : নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. নাজমুল হাসান বলেছেন, মাদকের কারণে মনুষত্ব হারিয়ে ফেলছে, মোটরসাইকেল জোরে চালানো, কানে দুল পরে হিরোইজম দেখাতে চায়। কেউ কেউ অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে নিজেকে আধুনিকতার পরিচয় দিতে চায়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, আমার লক্ষ্য ছিলো আজকের অবস্থানে আসা। বিসিএস পরীক্ষায় আমার প্রথম চয়েজ ছিলো পুলিশ। তাই আজ আমি এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। আমি কখনো মাদক সেবন করি নাই। আমি সিগারেট পান করি না। আমি কখনো অনিয়ম বা ক্ষমতার অপব্যবহার করি নাই। আর আমি মনে করি এটাই আসল হিরোইজম। কারণ আমার মা-বাব আত্মীয় স্বজন আমাকে নিয়ে গর্ব করতে পারে। আলোচিত হলি আর্টিজেনে যারা নিহত হয়েছিল, তারা এই হিরোইজমে ভুগে ছিলো স্টুডেন্ট লাইফে। তারা কোন ধর্মের মধ্যে ছিলো না। কারণ কখনো কোন ধর্ম জঙ্গিবাদের কথা বলে না। তোমাদের কাছে একটাই প্রত্যাশা থাকবে নিজে ভালো থাকো এবং পরিবারকে ভালো রাখো, দেশকে ভালবাসো।

৬ আগস্ট শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ এর পদ্মা মিলনায়তনে সরকারি তোলারাম কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তরুন সমাজকে মাদক, ইভটিজিং, নারী নির্যাতন ও সন্ত্রাস বিরোধী সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভার বক্তব্যে তিনি এসকল কথা বলেন। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য তুলে ধরেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রাণী সিংহ।

তিনি আরও বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে শুধুমাত্র তাদের জন্য, যারা আগামীতে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিভাগে নেতৃত্ব দেবে। আগামী দিনে এই তরুনদের সচেতন করা, তারা যাতে বিপদগামী না হয়, তাদের দেশ প্রেম যাতে আমরা ইতিবাচক কাজে লাগাতে পারি, সেই জন্য আপনাদের কাছে আসা।

মো. নাজমুল হাসান বলেন, তরুনরা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের এই অপরাধের কারণে ধ্বংস হচ্ছে তাদের পরিবার। ধর্ষণের মতো অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। যার ফলে, একসাথে ২টি পরিবার শেষ হয়ে যায় নিমিষেই। এছাড়া ভালো মেধাবী শিক্ষার্থীরা মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। ভালো কলেজ বা ইউনিভার্টিতে সুযোগ পেয়েও অনেকের এগুলো ভালো লাগে না। সেই ছেলে আছে বিপদগামীদের মধ্যে, সে সমাজের সম্পদ না হয়ে সে এখন সমাজের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা সময় সে মাদক খায় এবং মাদক তাকে খায়। তারা চাইলেও ভালো কিছু ভাবতে পারে না। মাদকে আশক্ত হয়ে অনেক সময় মা-বাবাকে খুন করে। মাদকের টাকা না পেয়ে, ওরা তাদের মাকে বোনকে বিক্রি করতে দ্বিধাবোধ করে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুলিশ হলো বাংলাদেশের প্রধান আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। অতএব আমাদের সবর্দা জনগণের পাশে থেকে কাজ করতে হয়। অনেকে পুলিশকে আতঙ্ক মনে করেন, কিন্তু আসলে আমরা কেমন সেটা আপনাদের পাশে থেকে বুঝাতে চাই। যাতে করে পুলিশের জন্য মানুষের অহেতুক ভীতি কমে যায়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রাণী সিংহ বলেন, আমি তোলারাম কলেজের ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর যেমন অভিবাবক তেমনি আমি এই ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর মা। আজ যে উপদেশগুলো তোমরা পেয়েছো সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করবে। পুলিশ তোমাদের বন্ধু তারা তোমাদের শত্রু নয়। এটাই রাখবে মাথায় সব সময়। তোমাদের কাছে প্রত্যাশা থাকবে তোমরা মোহে মোহগ্রস্থ হবে না।

কলেজের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জীবন কৃষ্ণ মোদক এর সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারি তোলারাম কলেজের উপাধ্যক্ষ শাহ্ মো. আমিনুল ইসলাম সহ কলেজের শিক্ষকবৃন্দ।

add-content

আরও খবর

পঠিত