নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : আর মাত্র ২ দিন পরে পূর্বাচল উপশহরে স্থায়ী প্যাভিলিয়নে শুরু হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) শুরু হতে যাচ্ছে প্রথম বারের মতো এ মেলা। গত বছর এ বাণিজ্য মেলা হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ এর কারণে তা আর হয়ে উঠেনি। গত ২১ই অক্টোবর পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন পুরোদমে চলছে মেলা প্রাঙ্গণ সৌন্দর্য বর্ধণ ও স্টল প্রস্তুতির কাজ। এখনই দর্শনার্থীদের পদচারণায় উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে এখানের পরিবেশ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের ৪ নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর রোডের ০০২ নম্বর প্লটে নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার। একর জমির ২৬ একরের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এ সেন্টার। আধুনিক কারপার্কিং, সম্মেলন কক্ষ, সভাকক্ষ, প্রেসসেন্টার, অভ্যর্থনা কক্ষ, বাণিজ্য তথ্যকেন্দ্র, আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ডরমিটরি রয়েছে। এছাড়া এক্সিবিশন সেন্টারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক সিসি টিভি ক্যামেরা, আধুনিক ব্যবস্থাসহ বিদ্যুতের নিজস্ব সাবসেন্টার, সার্ভিস রুম, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, কালভার্ট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে।
রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভার এলাকা থেকে ৩শ ফুট সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান। তাতে সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘদিন ধরে যানজটের কবলে পড়ছেন যাত্রীরা। ভোগান্তির যেন কমতি নেই। পূর্বাচল হয়েই এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক নামে পরিচিত ঢাকা বাইপাস সড়কের ৪ লেনে উন্নীত হওয়ার কথা থাকলেও তার কাজ চলছে ধীরগতিতে। এখানেও যানজটের দীর্ঘসারি। এমন পরিস্থিতিতেই প্রস্তুত হচ্ছে মেলার ষ্টল। মেলার দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ^রোড ফ্লাইওভার থেকে মেলা প্রাঙ্গণে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিআরসিটিসির বাস চলবে।
মেলার পাশ্ববর্তী গুতিয়াবো এলাকার বাসিন্দা রাসেল মাহমুদ জানান, অপেক্ষার প্রহর শেষে করোনা মহামারী পরিস্থিতি কাটিয়ে আগামী ২০২২ সালের ১ লা জানুয়ারী শুরু হবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এবারই প্রথম গ্রামের লোকজন সরাসরি সুযোগ পাচ্ছে এ মেলায় অংশ নিতে। তবে রাস্তাঘাটের বেহালের কারণে দর্শনার্থীরা কিছুটা ভোগান্তির সম্মূখীন হতে পারে। তাই আগামী বছর মেলার আগেই শতভাগ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে।
রূপগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ছালাউদ্দিন ভুইয়া বলেন, রূপগঞ্জের শিমুলিয়া, ব্রা²ণখালী, গুতিয়াবো, দড়িগুতিয়াবো, কালনী, গোবিন্দপুর, ফুলবাড়িয়া, মাঝিপাড়া ও আলমপুরসহ মেলা এলাকার বাসিন্দরা সহজ,সরল,নিরীহ, বন্ধুসুলভ ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই মেলা এলাকায় নিরাপত্তার কোন ঝুঁিক নেই। দর্শনার্থীরা নির্বিঘ্নে অবাধে মেলায় আসা যাওয়া করতে পারবেন।
রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী উজ্জল মল্লিক বলেন, পূর্বাচলের ১৩ কিলোমিটার রাস্তা চলাচলের জন্য উপযোগী করে তোলা হয়েছে। দেশ বিদেশের উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শন মেলাকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।
মেলা আয়োজক কমিটির পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১লা জানুয়ারী ভিডিও কনফারেন্সে মেলার উদ্বোধন করবেন। তা মাসব্যাপী চলবে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তায় থাকবে ১ হাজার ৬শ পুলিশ।
১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছরই অস্থায়ীভাবে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে অস্থায়ী জায়গায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। এক্সিবিশন সেন্টারটি নির্মাণে মোট ব্যায় হয়েছে ৭৭৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে চীনের অনুদান ৫২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সরকারের ২৩১ কোটি টাকা ও ইপিবি নিজস্ব তহবিল থেকে ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকা।