নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন ) : ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়ে অতিষ্ট জনসাধারণ। ফলে জনসাধারণকে এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে ( এখানে ময়লা ফেলা সর্ম্পূণরুপে নিষেধ ) লিখে সাইনর্বোড স্থাপন করে দায়সাড়া দায়িত্ব পালন করেছিলেন সড়ক ও জনপদ। কিন্তু বিষয়টি এমন হয়েছে যে এ নিষেধ মানতে নারাজ সংশ্লিষ্ট পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। এরই সূত্র ধরে রাতের আন্ধকারে সওজ এর ( ময়লা ফেলা নিষেধ ) সাইনর্বোডটি উধাও করে ফেলে অজ্ঞাতজন। এ নিয়ে হাস্যরস প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন ভুক্তভোগী জনসাধারণ, তাদের ভাষায়- ( ময়লা ফেলা নিষেধ ) কিন্তু সাইনর্বোড ফেলতে তো আর নিষেধাজ্ঞা নেই। এ ব্যপারে সাইনর্বোড স্থাপন ছাড়া সওজ এর যেন আর কিছুই করার নেই। এভাবে মাঝে মধ্যেই সাইনর্বোড স্থাপন করা হলেও বেশী দিন তা থাকেনা। কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না ময়লা ফেলা।
এর ফলে একদিকে যেমন দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, অপরদিকে স্বাস্থ্য ঝুকিঁতে নানা রোগের আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাসহ এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লাখো মানুষ। মাসের পর মাস ও বছর পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের এই জায়গাটি এখন নিয়মিত আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে।
ফতুল্লা আর্ন্তজাতিক খানসাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের অদূরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীণ জালকুড়ি স্ট্যান্ড সংলগ্ন রাস্তার পাশেই গড়ে উঠেছে এই বিশাল ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। এই পথে যাতায়াতকারী যাত্রীদের ময়লার তীব্র দূর্গন্ধে নাক চেপে ধরে রাখাটাও যেন অভ্যাসে রুপান্তরিত হয়ে গেছে। আর যানবাহনের জানালার কাঁচ বন্ধ রাখতেও যাত্রীরা এখন বাধ্য।
তাছাড়াও এই এলাকাটি ঘিরে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতাধীণ বিশাল ঘনবসতি। এখানে বসবাসরত ভাড়াটিয়ারাও এ ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেতে চলে যাচ্ছে অন্যত্র ঠিকানায়। এতে করে বাড়ির মালিকদের মধ্যে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ। কিন্তু এই ক্ষোভের বহি: প্রকাশ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে জানালেও পাচ্ছেনা বাস্তব কোন সুফলতা।
অথচ এই এলাকার পাশের সড়কটি ঘেঁসে রয়েছে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন খান সাহেব ওসমান আলী ষ্টেডিয়াম, জেলা পাসপোর্ট অফিস, বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্ক, কিছু দূরেই অবস্থিত জেলা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলাটি একটি র্পযটন এলাকা হিসেবেও ব্যাপক সুপরিচিতি লাভ করেছে। যানজটবিহীন নিরিবিলি সুন্দর সড়ক হওয়ায় এই পথ দিয়েই আসা যাওয়া করে থাকে দেশ-বিদেশের বিখ্যাত খেলোয়াড়, বিদেশী ভায়ার, র্পযটক ও ব্যবসায়ীরা। নারায়ণগঞ্জ সিটিতে প্রবেশের মূল সড়ক এই লিংক রোড, অতএব এ ময়লার র্দূগন্ধে নাক চেপে প্রবেশ করেই নগরে ঢুকে আগন্তকদের মাঝে সৃষ্টি হচ্ছে ভ্রান্ত ধারণা। তাদের ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়ায় অনেক সময় শুনতে হচ্ছে ময়লার শহর নারায়ণগঞ্জ! এমন অনাকাঙ্খিত মন্তব্য। যে কারণে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছে এখানকার বাসিন্দা সহ র্সবসাধারন।
এ প্রসঙ্গে ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ই¯্রাফিলের সাথে যেগাযোগ করতে তাঁর মুঠোফোনের ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। এতে করে র্সবসাধারণের দূর্ভোগের অন্তু ফিরে পেতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির ভুমিকা কতটুকু তা জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে হোসিয়ারি ব্যাবসায়ী মো: পারভেজ জানায়, ব্যাবসার প্রয়োজনে প্রতিদিন এ রাস্তায় যাতায়াত করি। তীব্র দূর্গন্ধ নিয়েই আমার দিন শুরু এবং শেষ করতে হয়। ময়লার প্রচন্ড র্দূগন্ধ সহ্য করতে না পেরে অনেককেই বমি করতে দেখা যায়। বাধ্য হয়েই দম আটকে রেখে এ রাস্তায় আমাদের চলাচল করতে হয়।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আলিউল হোসেন জানায়, এই ময়লার স্তুপের কারণে সত্যিই অনেকের ভোগান্তি হতে হয়। তা মেনে না নেওয়ার কিছু নয়। যেহেতু এখান দিয়ে আমাদের অনেক সরকারী অফিসাররাও চলাচল করে। তাদেরও একই অভিযোগ। এর আগে আমরা পরিবেশ অধিদপ্তর র্কতৃপক্ষকে অবগত করেছিলাম। এবং ময়লা ফেলা র্কাযক্রম বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তর একটি অভিযানও পরিচালনা করেছিলেন। আর সাইনর্বোডটি আসলে আমারা একাধিকবার লাগিয়েছি। এ নিয়ে দুইবার হলো সাইনর্বোড নিয়ে গেছে। কিন্তু কে বা কারা এ কাজ করছে, কেন করছে জানিনা। এ ব্যপারে আপনাদের পরবর্তি পদক্ষেপ কি জানতে চাইলে ব্যস্ত আছে বিধায় বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।