নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪: সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব (১৪ জানুয়ারী) রবিবার থেকে শুরু। মেলা উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ জানান, আবহমান গ্রাম বাংলার বিলুপ্ত প্রায় লোকজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছরের মতো এবারও সোনারগাঁয়ে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। লোকজ উৎসব উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর।
এবার গ্রামীন লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম “কাঠের কারুশিল্পের প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন” শিরোনামে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া লোকসংস্কৃতি ও লোক কারুশিল্পের নিদর্শনসমূহের সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও পুনরুজ্জীবনের লক্ষে বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এই লোকজ উৎসব।
উৎসব উপলক্ষে কারুশিল্প ফাউন্ডেশনকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। এজন্য বিভিন্ন স্থানে রং-বেরংয়ের ব্যানারে শোভা পাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন লোকজ প্রবাদ প্রবচন ও খনার বচন লেখা হয়েছে।
উৎসবে যেসব কারুশিল্প এবার স্থান পেয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- সিলেট ও মুন্সিগঞ্জ অঞ্চলের শীতলপাটি, নওগা ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি ও মুখোস, ঢাকার শাখা শিল্প ও মৃত শিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, ঠাকুরগাঁওয়ের বাশের কারুশিল্প সোনারগাঁয়ের এক কাঠের চিত্রিত হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প ও নকশী কাঁথা শিল্প, কুমিল্লার তামা কাসা, রাঙামাটি ও বান্দরবানের ও সিলেটের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টির কারুপন্য, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা।
ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, মেলার লোকজ মঞ্চে প্রতিদিন পরিবেশিত হবে বিভিন্ন লোকজ অনুষ্ঠানমালা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোক শিল্পীরা এখানে গান পরিবেশন করবেন।
এসব পরিবেশনার মধ্যে রয়েছে, লোকজ নাটক, লোক কাহিনীর যাত্রাপালা, বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়লি গান, জারিগান, সারিগান, হাছন রাজার গান, লালন সঙ্গীত, মাইজভন্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গায়ে হলুদের গান, উপজাতীয়দের অনুষ্ঠান, শরিফতি-মারফতিগান, লোকজ কবিতা, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথিপাঠের আসর।
এবারের লোকজ মেলায় প্রায় ১৮০টি লোকজ স্টল স্থান পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে হস্তশিল্প ৪৫টি, পোশাক শিল্প ৪৫টি, স্টেশনারী ও কসমেটিক্স ৩৪টি, খাবার স্টল ১৬টি, মিষ্টির ১০টি ও ৩০টি স্টল কারুশিল্পের কারুপণ্য উৎপাদন প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত এ মেলা চলবে।