নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে দাফন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের আত্মসস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের লাশ । এ নিয়ে স্থানীয় জনগণ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান।
শনিবার (১১ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। পৈত্রিক বাড়ি ভোলার স্থানীয় জনগণ বঙ্গবন্ধুর খুনির মরদেহ তাদের মাটিতে দাফন করতে আপত্তি তোলায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর তার মরদেহ স্ত্রী সালেহা বেগমের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় কারাগারের ভেতর থেকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয়। ভোরে তাকে সোনারগাঁয়ের শম্ভুপুরা ইউনিয়নের হোসেনপুর এলাকায় শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে রোববার (১২ এপ্রিল) সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় জনগণ ও আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উৎসুক জনতা কবরস্থানের আশেপাশে জড়ো হতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাদেরকে সরিয়ে দেয়।
দাফন করা আবদুল মাজেদের লাশ অপসারনের দাবি জানিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো.শহীদ বাদল বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্মভূমি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ের মাটিকে কলংকমুক্ত করতে হলে এ লাশ এখান থেকে অপসার করতে হবে।সোনারগাঁয়ের মাটিতে খুনী মাজেদের লাশ দাফন করায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারবর্গ সহ জাতীয় ৪ নেতার হত্যাকারীদেরকে খুনী মোশতাক ও জিয়া পুরস্কৃত এবং পূণর্বাসিত করেছিলেন। তাই জাতির পিতার বাংলার মাটিতে সেই খুনী ও কুলাঙ্গারদের ঠাই হতে পারেনা। তাই অনতিবিলম্বে খুনী মাজেদের লাশ অপসারণের মাধ্যমে সোনারগাঁয়ের মাটিকে কলংকমুক্ত করার দাবী জানাচ্ছি।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত বলেন, সোনারগাঁয়ে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে দাফন করাটা লজ্জাজনক। ভোর বেলা গোপনে এই দাফনের বিষয়টি সোনারগাঁবাসী মানতে চাচ্ছে না।
প্রতিবাদ জানিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম বলেন, এই কলঙ্কের ভার সোনারগাঁবাসী নেবে না। লকডাউনের কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। নইলে লাশ তুলে নদীতে ফেলে দিতাম।
শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, লাশ দাফনের বিষয়টি জানার পরপরই লোকজন এই এলাকায় জড়ো হতে থাকে। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে মানুষজনকে সরিয়ে দেয়। এখনও এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ জানালেন সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, সকালে এলাকাবাসী কবরস্থানের পাশে জড়ো হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা রয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রস্তুত।