নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সোনারগাঁও প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে নারীসহ হেফাজত ইসলামে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়ায় স্থানীয় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের উপর হামলা চালানোর ঘটনায় হেফাজত কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ৬ই এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলার অভিযোগ দায়ের করেন।
মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়ায় এর আগের দিন ৫ই এপ্রিল সোমবার রাতে স্থানীয় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের উপর হামলা চালিয়েছে হেফাজতের নেতাকর্মীরা। উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের ভাটিরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মামুনুল হকের দাড়ি ধরে টান দেওয়ার অভিযোগ তুলে সাংবাদিকের উপর হামলা করা হয়। আহত ওই সাংবাদিককে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে সোনারগাঁ পৌরসভার দিঘিরপাড় এলাকায় রয়েল রিসোর্টে গত ৩ এপ্রিল শনিবার বিকালে হেফাজত নেতা মামুনুল হককে স্থানীয়রা এক নারীসহ অবরুদ্ধ করে রাখে। ওই সময় স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে ফেইসবুকে লাইভ করেন। চ্যানেল এস নামের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সোনারগাঁ প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান মামুনুল হকের দাড়ি ধরে টান দিয়েছে এমন অভিযোগ উঠে আসে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা তাকে ওই সময় থেকেই মারধরের হুমকি দেন। পরবর্তীতে সাংবাদিক হাবিবুর রহমান নিজেকে আত্মগোপন করে রাখেন।
গত ৫ই এপ্রিল সোমবার রাতে তিনি সনমান্দি ইউনিয়নের ভাটির চর গ্রামে নিজ বাড়িতে গেলে ওই এলাকার হেফাজত নেতাকর্মীরা বাড়িতে হামলা করে। এ সময় তাকে মারধর করে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ক্ষমা চাইতে বলে মামুনুল হকের কাছে। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, মামুনুলের অনুসারীরা সাংবাদিক হাবিবকে লাঞ্ছিত করছেন।
তাদের মধ্যে একজন বলছেন, হুজুরের (মামুনুল হক) কাছে মাফ চাইতে হবে, হুজুর যাতে আপনাকে ক্ষমা করে দেয় এজন্য। আরেকজন বলেছেন, আপনি বলবেন, হুজুর (মামুনুল হক) কাছে আমি ক্ষমা চাই। সাংবাদিক হিসেবে সেখানে গিয়ে ভুল করেছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। তাদের কথা মতো ক্ষমা না চাওয়ায় সাংবাদিক হাবিবকে টেনে হেচঁড়ে মারধর করে সড়কের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েক দফায় মারধর করা হয়। এ সময় ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে পুলিশকে খবর দেন সাংবাদিক হাবিবের ছোট ভাই মোফাজ্জল হোসেন।
সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের ছোট ভাই মোফাজ্জল হোসেন জানান, ঘরে বড় ভাই হাবিবুর রহমান ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে হেফাজতের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে। টেনে হেঁচড়ে আমার ভাইকে ঘরের বাইরে নিয়ে মারধর করে। পরবর্তীতে পুলিশ এসে উদ্ধার করে তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সোনারগাঁ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, সাংবাদিক হাবিবের উপর হামলা চালিয়েছে হেফাজত সমর্থকরা। তাকে উদ্ধার করে রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে মামলা গ্রহন করা হবে।