নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দ এলাকায় মহাতীর্থ স্নান উদযাপন উপলক্ষে কঠোর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সংগঠনের নেতারা। যার ফলে স্নান উৎসব কোন প্রকার দূর্ঘটনা এড়াতে মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস, ১ হাজার পুলিশ, ১০০ সেচ্ছাসেবক সহ ১০টি পয়েন্টে সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হবে। এর সঙ্গে ৬টি পয়েন্টে পুলিশের ৬টি ওয়াচ টাওয়ার থাকবে।
এছাড়াও কোন প্রকার দূর্ঘটনা ছাড়া স্নান উৎসব মুখর ভাবে ও শান্তিপূর্ন ভাবে পালন করতে সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন। সেই সাথে উৎসবের দিন পূণ্যার্থীদের সেচ্ছাসেবা প্রদানের জন্য বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ও আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করার আহবান জানান।
৪ এপ্রিল সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি মূলক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভার শুরুতে সংসদ সদস্য এ.কে.এম সেলিম ওসমান নব-গঠিত মহাতীর্থ লাঙ্গনবন্দ স্নান উৎসবব উদযাপন পরিষদের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি ৫টি উপ-কমিটি গঠন করেন। উপ-কমিটি গুলো হলো, মহাতীর্থ মেলা কমিটি, আপ্যায়ন, স্বাস্থ্য বা মেডিক্যাল, নিরাপত্তা ও অর্থায়ন কমিটি। প্রত্যেক কমিটিতে একজন করে প্রধান করে মঙ্গলবারের মধ্যে পরবর্তী কর্মকান্ড চালিয়ে যাওয়ার জন্য আহবান জানান তিনি।
সেলিম ওসমান বলেন, এত বড় একটি সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠান। সবাই পুরোনো রাগ, দুঃখ, কষ্ট ভুলে গিয়ে সুন্দর ভাবে স্নান উৎসব উদযাপন করবো। এমপির ও জেলা প্রশাসনের ফান্ডের সাহায্যে স্নান ঘাট এলাকার রাস্তার কাজ চলছে। যেটা হলে বর্তমানের চেয়ে অনেক সুন্দর হবে। নদীর দুই পারে ২০টি ঘাট করতে পারলে আর কোন দিন কোন সমস্যা হতে পারে না। আমরা চাই এ লাঙ্গলবন্দ স্নান ঘাট তথা নারায়ণগঞ্জ পযটন শহর, নগরী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের র্তীথ স্নান হিসাবে সারা বিশ্বে প্রচার হবে।
সেলিম ওসমান তরুনদের সম্পৃক্ত করার আহবান জানিয়ে বলেন, অনেকে বয়স হয়ে গেছে। এখন কাজ করতে পারেন না। তাই তারা চেয়ার দখল না করে নতুন ও তরুন প্রজন্মের কাছে তুলে দিতে হবে। এক সময় তারাই যোগ্য নেতৃত্ব দিবে।
এসময় জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য এ.কে.এম সেলিম ওসমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছরোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গাউছুল আজম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মুহিবুর রহমান, বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনারা নাজনীন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলার সভাপতি চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক প্রবীর সাহা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলার সভাপতি গোপী নাথ দাস, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শংকর সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুজন সাহা, মহানগরে সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীলিপ মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত মন্ডল, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন পাল, যুগ্ম সম্পাদক উত্তম সাহা, সুশীল দাস, চন্দন পাল ও প্রমুখ।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মুহিবুর রহমান বলেন, জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য ১ হাজার পুলিশ সদস্য দেয়া হবে। এর সঙ্গে সার্বক্ষনিক মনিটরিং করার জন্য একটি কন্ট্রোল রুম, ৬টি ওয়াচ টাউয়ার করা হবে। তবে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ১০টি পয়েন্টে সিসি টিভি ক্যামেরা, গাড়ি র্পাকিং এরিয়া নির্ধারন, প্রয়োজনে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য টোকেন, রাস্তায় ভিক্ষুক বসতে না দেয়া, রাস্তায় কোন ভাবে মেলার দোকান বসতে দেয়া যাবে না। এছাড়াও পুর্ন্যথীদের করনীয় নিদের্শনা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা।
এসব বিষয়ে সেলিম ওসমান জানান, ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক দেয়া হবে। যাদের পরনে হুলুদ কিংবা লাল টি-শার্ট, হাতে বাঁশি, মাথায় টুপি, রাতের জন্য টর্চ থাকবে। এছাড়াও ভক্তদের জন্য প্রসাদ বিতরণের জায়গা আলাদা করা হয়েছে। বাথরুম, খাবার পানি ও আশ্রয়ের স্থানও আলাদা করা হয়েছে। এগুলো ছাড়াও স্নান শান্তিপূর্ণ ভাবে উদযাপন করা জন্য মেলা নির্দিষ্ট স্থানে অনুষ্ঠিত হবে। ভক্তদের জন্য মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরি দল থাকবে।