নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( প্রেস বিজ্ঞপ্তি ) : আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনে ১৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে বিএনপি নেতা মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সমর্থন প্রদানের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রবিউল হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের জন্য সুপারিশ করে মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে কেন্দ্রে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ২৯ই ডিসেম্বর বুধবার বিকালে ২নং রেল গেটস্থ নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের উপস্থিতিতে তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে এ অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এটা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। দলের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
রাষ্ট্রপতির সংলাপ করে ইসি গঠন কোনো সমাধানে আসবে না- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি অগণতান্ত্রিক ও বিশৃঙ্খলার পথে এগুতে চাইলে এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি অ্যাড. খোকন সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ানসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রায় ৬০ নেতাকর্মী সহ স্থানীয় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রবিউল হোসেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েও গত ২৭ই ডিসেম্বর তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। তবে নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী থাকলেও কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থিতা থাকে না।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েকটি ইস্যুতে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন রবিউল। তিনি গত দুটি নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। এবার রবিউল নির্বাচনে অংশ নিলেও কিছু কারণে পিছিয়ে ছিলেন। মহানগর আওয়ামী লীগের বড় পদে থাকলেও জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে তিনি। অন্যদিকে জনপ্রিয়তার এগিয়ে রয়েছেন খোরশেদ। গত বছর করোনার শুরুতে খোরশেদের জনহিতকর কাজ তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রবিউল হোসেন সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেও ২৭ ডিসেম্বর প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান এবং মহানগর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক খোরশেদকে প্রকাশ্যে সমর্থন দেন। যার বড় ভাই তৈমুর আলম খন্দকার এই নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তৈমুরের ছোট ভাই খোরশেদকে বিজয়ী হওয়ার পথ করে দেওয়ায় রবিউলের উপর জেলা ও মহানগর কমিটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। এতে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে বলে মনে করেন তারা। যা জানার পর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগও এই ঘটনায় চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়। যার ফলশ্রুতিতে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
কাউন্সিলর প্রার্থী মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি রবিউল হোসেন ২০১৬ সালে খোরশেদের কাছে প্রায় ৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। সেই সময় কাউন্সিলর খোরশেদ পেয়েছিল ১০ হাজার ২২০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের রবিউল হোসেন পেয়েছিল ৬ হাজার ৩৬১ ভোট।