নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সোনারগাঁ সংবাদদাতা ) : সোনারগাঁয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে মা ও তার যমজ শিশুরা। অর্থাভাবে ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছে না আগুনে ঝলসে যাওয়া মায়ের। আর তার শিশুরা কাতরাচ্ছে ক্ষুধার জ্বালায়। মা তার শিশুদের সময় মতো ভরণ পোষণ করতে পারছে না। দুর্ঘটনায় স্বামীর পা ভাঙার পর শিশু সন্তানদের জন্য খাবার তৈরি করতে গিয়ে আগুনে ঝলসে যান তাসলিমার নামে এক গৃহবধূ।
অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে না পেরে দুর্বিষহ যন্ত্রনায় ওই গৃহবধূ। অপরদিকে, ক্ষুধার জ্বালায় কাতরাচ্ছে নবজাতক দুই শিশু। স্ত্রী-সন্তানদের ভরণ পোষণ ও চিকিৎসা ব্যয়ের খরচ জোগাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কর্ম-অক্ষম সোহেল মিয়া।
সোহেল মিয়া জানান, জীবিকার তাগিদে পাঁচ বছর আগে তিনি তার স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে নিজ এলাকা পটুয়াখালী ছেড়ে সোনারগাঁ পৌরসভা এলাকায় আসেন। নিজে অটোরিকশা চালিয়ে ও স্ত্রী পোশাক শিল্প কারখানায় কাজ করে যে অর্থ আয় হতো তা দিয়ে ভাড়া বাসায় তাদের কোনো রকমে দিন কেটে যাচ্ছিল। সাত মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় সোহেল মিয়ার পায়ের গোড়ালির হাড় ভেঙে অনেকটা কর্ম-অক্ষম হয়ে পড়েন। এ সময় স্ত্রী তাসলিমা পরিবারের হাল ধরেন। এরই মধ্যে তার স্ত্রীর গর্ভে যমজ শিশু জন্ম নেয়।
এদিকে গত ২৩ ডিসেম্বর সোমবার শিশুদের খাবার তৈরি করতে গিয়ে আগুনে ঝলসে যায় স্ত্রী তাসলিমার শরীরের ১৬ ভাগ। স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাসলিমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভাড়া বাসা নিয়ে আসেন।
তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্ত্রীর কর্মস্থল পোশাক শিল্প কারখানার সহকর্মীরা নিজেদের উদ্যোগে অর্থ তুলে তাৎক্ষণিক সহযোগিতা করেছেন।
তাসলিমার বড় বোন রোকসানা কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, অর্থাভাবে বোনের ঠিকমতো চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি দুই নবজাতকসহ তিন সন্তান নিয়ে ওই পরিবারের সব সদস্যকে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে।
সোনারগাঁ থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, ওই গৃহবধূ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত নবজাতকদের ভরণ পোষণের জন্য নিয়মিত আর্থিক সহযোগিতা করবেন তিনি।