মামলার বাদিকে পেটালো পিচ্ছি মিজান বাহিনী

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ফতুল্লা সংবাদদাতা ) : অভিযোগকারী নূরে আলমকে দুই দফা বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে পিচ্চি মিজান বাহিনীর লোকজনের বিরুদ্ধে। তাঁকে উদ্ধার করে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহত অবস্থায় সোমবার (২৮ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টায় ফতুল্লা মডেল থানা গেটে প্রথম দফা এবং ডিআইটি মাঠে দ্বিতীয় দফা পেটানো হয়েছে বলে আহত নূরে আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, শনিবার ঝুট ব্যবসায়ী নূরে আলমের সহযোগি শহিদুল ইসলামের উপর পিচ্চি মিজানের নেতৃত্বে তাঁর বাহিনী হামলা চালায় ফতুল্লার গাবতলী কেতাব নগর এলাকার। তখন শহিদুলকে বেধড়ক মারপিট করে সন্ত্রাসীরা। এই ঘটনায় আলম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মাসুদুর রহমান ওরফে পিচ্চি মিজান, লাভলু, রাজু ও সজল সহ ৮ জনকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগম দায়ের করেন।

এদিকে নূরে আলমকে মারপিট করা হয়েছে এমন কথা স্বীকার করলেও ঘটনাটি থানা গেটের সামনে ঘটেনি বলে দাবি করেছেন ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ইন্সপেক্ট (অপারেশন) মুজিবুর রহমান।

এ অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (২৮ মে) দুপুরের দিকে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ টিচ্চি মিজানকে গাবতলী কেতাব নগর থেকে গ্রেফতার করে থানা নিয়ে আসে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে একটি প্রভাবশালী মহলের নিকট আত্মীয় ছুটে যান থানায় এবং পিচ্চি মিজানকে ছাড়িয়ে আনতে তদ্বির শুরু করেন।

এদিকে সন্ধ্যার পর পিচ্চি মিজান বাহিনীর লোকজন শহিদুল ইসলামের মা ও স্ত্রীকে ঘটনাটি আপোষ মিমাংসার জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে থানায় নিয়ে আসেন বলে সূত্র জানায়। এর আগে ভিকটিমের আত্মীয় স্বজন ছাড়া মামলা নেয়া যাবে না বলে থানা থেকে নূরে আলমকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

অপরদিকে একটি সূত্র জানায়, রাতের দিকে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) শাহ মো. মঞ্জুর কাদের মামলা রুজু করতে নির্দেশ দিলে অভিযোগ দাখিলকারী নূরে আলমকে থানায় এসে এজাহার কপিতে স্বাক্ষর করার জন্য আসতে বলেন ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মুজিবুর রহমান।

নূরে আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাত ১২ টার দিকে নূরে আলম ফতুল্লাা মেডল থানায় যান মামলার এজাহার কপিতে স্বাক্ষর করার জন্য। এসময় তিনি থানা গেট দিয়ে থানার অভ্যন্তরে ঢোকার সময় প্রভাবশালী একটি পরিবারের নিকট আত্মীয় নূরে আলমের কলার চেপে ধরেন এবং সেখানেই তাঁকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে নূরে আলম বাঁচার জন্য তাঁকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাঁর পিছু নেয় ওই প্রভাবশালী সঙ্গে থাকা পিচ্চি মিজান বাহিনীর লোকজন।

তাঁরা আরও জানান, পিচ্চি মিজান বাহিনীর লোকজন নূরে আলমকে কিছু দূর যাওয়ার পর তথা ফতুল্লা ডিআইটি মাঠে গিয়ে আটকে ফেলেন এবং সেখানে বেধড়ক মারপিট করেন তাঁকে। একপর্যায়ে ক্ষতবিক্ষত নূরে আলমকে টেনে-হিঁচড়ে থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য। এসময় থানা গেট থেকে পুলিশ সদস্যরা সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দিলে তাঁরা পালিয়ে যায়। পরে আহত নূরে আলমকে উদ্ধার করে খানপুর হাসপাতাল নিয়ে আসা হয়।

ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মুজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মারপিট করা হয়েছে শুনেছি। তবে সেটি থানায় বা থানা গেটে নয়। ডিআইটি মাঠে এ ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তবে এ ঘটনায় কেউ এখনও কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।

উল্লেখ্য, মাসুদুর রহমান ওরফে পিচ্চি মিজানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে ফতুল্লা মডেল থানায় ৯টি মামলা রয়েছে। সর্বশেষ শহিদুল ইসলামের উপর হামলার অভিযোগ এনে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নূরে আলম। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক জিডিও রয়েছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত