নরায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত লিংকন ) : অসহায় এক বৃদ্ধ রিকশা চালকের প্রতি মানবিকতা দেখিয়ে প্রতিদান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন ট্রাফিকে কর্মরত পুলিশ শহিদুল ইসলাম। মঙ্গলবার কল্যান সভায় এক আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে পুরস্কার হিসেবে নগদ অর্থ তুলে দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। এছাড়াও সকল পুলিশকে এভাবেই মানবিক হয়ে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান পুলিশ সুপার রাসেল।
এ বিষয়ে অনুভূতি জানিয়ে শহিদুল ইসলাম জানান, আমার পুলিশের জীবনে প্রথম কোন প্রাপ্তি এটি। এসপি স্যার যে সম্মান আমাকে দিয়েছে আমি যেন সেটি ধরে রাখতে পারি, সেজন্য সকলের দোয়া চাচ্ছি। আর বিশেষ করে প্রতিবেদকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। কারণ স্বার্থ ছাড়াই এমন প্রতিবেদন এখন তেমন একটা দেখা মিলে না। আমি আমার দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম ঠিক তেমনি আড়ালে থেকে সাংবাদিক ভাই তার কাজ করেছে। যার পুরোটাই ছিল মানুষকে মানবিক হয়ে উঠার একটি বার্তা পৌছানোর দায়িত্ব।
জানা গেছে, পায়ে জুতো নেই। পড়নে লুঙ্গিটিও ছেড়া। যেখানে তীব্র শীতে সবাই জবুথবু। সেখানে এক বৃদ্ধ রিকশা চালকের এমন অবস্থা দেখতে পেয়ে সহানুভূতি দেথিয়েছিল নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিকে কর্মরত সেই পুলিশ সদস্য। গত ৮ জানুয়ারী দুপুরে নগরীর ২নং রেল গেইট এলাকায় এমনই চিত্র দেখে নজর কেড়েছে অনেকেরই। এরপর থেকে কুড়িয়েছেন বেশ প্রশংসাও।
ওইসময় প্রতক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, একপাশে সিগন্যালের যানজট থাকায় উল্টো পথে আসছিল বৃদ্ধ রিকশা চালক। ওই মুহূর্তেই পথরোধ করে দাঁড়িয়ে যান ট্রাফিকে কর্মরত পুলিশ শহিদুল ইসলাম। দায়িত্ব অনুযায়ী বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসা করেন কেন উল্টো পথে এসে আইন ভঙ্গ করলেন। আর তখনই ভীত হয়ে কাদোঁ সুরে বলেন পায়ে জুতা নাই, লুঙ্গিটাও ছিড়া। শীতে তেমন খেপ (যাত্রী) পাই না। তাই তাড়াতাড়ি গেলে ওইপাড়ে একটা খেপ নিতে পারতাম। তাই অমান্য করসিলাম। আর ভুল হবে না স্যার। আমারে ছাইড়া দেন। এমনকথা শুনতেই হাসি দিয়ে ট্রাফিক পুলিশ শহিদুল তার জন্য তৎক্ষনাত লুঙ্গি এবং জুতো কিনে দেন। তারপর ট্রাফিক আইন যেন না ভঙ্গ করে সে বিষয়ে সচেতন করেন।
এসময় পথচারী এবং বেশ কয়েকজন তা তাকিয়ে দেখে খুব বাহবা দেন। কেউ কেউ বলতে থাকেন জনগনের পুলিশ এমনই হওয়া উচিৎ। সাধারণ মানুষগুলোর সাথে পুলিশের এমন আচরণ হলে সকলেই মন থেকে চেষ্টা করবে আইন মেনে চলতে এবং পুলিশকে শ্রদ্ধা করতে। ওইসময় মানবিক পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল ইসলামকেও কয়েকজন ধন্যবাদ জানান।