মাদক সম্রাজ্ঞীর ডা‌য়েরী‌তে তা‌লিকায় যা‌দের নাম, এরা কারা?

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : ফতুল্লা থানাধীন চাঁনমারী বস্তীতে মাদক সম্রাজ্ঞী ময়নার নোটবুকে পাওয়া গেছে মাসোহারা দেয়ার দীর্ঘমেয়াদী তালিকা। যে তালিকায় সরকারী কর্মকর্তা, শেল্টারদাতা, গ্রাহক সহ রয়েছে অনেকেরেই নাম। এই ডায়েরী নোটবুকের প্রায় ১৬ পৃষ্ঠাই লিখা আছে দিন তারিখ সহ মাসোহারার টাকার অংক ও গ্রহনকারীর নাম। সেখানে লিখার বানানে ভুল দেখা গেলেও টাকার অংক ছিলো সঠিক। তালিকায় লেখা আছে পুলিশ, সিআইডি, আবগারী, ফর্মা, ক্যাডার, সাংবাদিকের নাম। প্রশ্ন উঠেছে যেখানে প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার সেখানে এই বখরা নেয়া লোকগুলোর ক্ষমতা নিয়ে।  মাদক সম্রাজ্ঞী এর নোটবুকে লিখা তালিকায় যাদের নাম এরা কারা? আর এদের আইনে আওয়তায় এনে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব কার?

পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সন্নিকটে চানমারী বস্তিতে র‌্যাব হেড কোয়ার্টারের আইন কর্মকর্তা মো. গাউছুল আজমের অভিযানে এক মাদক বিক্রেতার কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি নোটবুক (পকেট ডায়েরী)। নোটবুক খোলার পর চোখ কপালে উঠে অভিযানে অংশ নেয়া র‌্যাব সদস্য ও উপস্থিত সাংবাদিকদে। এতে লেখা রয়েছে ফারি (ফাঁড়ি) পুলিশ ৩৩০০, আবগারি ( জেলা মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর) ৬ হাজার, সিআইডি ২০০০, টহল পুলিশ ৫০০, কোর্ট পুলিশ ১০০, সাইফুল পুলিশ ১০০, করিম পুলিশ ২০০, রুমান পুলিশ ৫০০, কামরুলের (ফতুল্লার এসআই কামরুল কী-না, জানা যায়নি) ফর্মা ৫০০। আছে সন্ত্রাসী ও কথিত সাংবাদিকের নাম।

সাংবাদি (সাংবাদিক) ৩৫০, বিপ্লব ৫০০০, টিপু ৫০০০ , রিপন ভাই ৫০০, সুমন ১০০০, কাইউম  ৫০০ সবুজ ৫০, আতা ১০০০, জালাল ৫০০, আবুল ৩০০, বিপ্লব ৪০০০, করিম পুলিশ ২০০, অপু ২০০, ফারি ৩৩০০, টহল পুলিশ ৫০০, আক্তার ২০০০, সাহা ১০০০, আমা ২০০০, আব্বাস ১০০, ফারুক ৫০০, বদুর ২০০, মাসুম পুলিশ ১০০, হাতেম ২০০০, বেনজির পুলিশ ২০০, কামরুল মামা ২০০০, লজির ৬০০, সাহিন ১০০০, আজিজ ৫০, আদি ভাই ৩০০, লবু ২০০, বাবু ৫০০, ফতুল্লা পুলিশ ৩০০, সাজু ১০০০, আমিন উদ্দিন ২০০, শিমুব ১০০, আমা ২০০০, শোলম ১০০০, খালা ২০০, দাদী ২০০, নুথর ৪০০০, আকাশ ৫০, জানু ১০০, হাবিব ১০০, মিলন ২০০, আলম মামা ৫০০০, রুবেল ১০০০, কাগজ ৬০০, বিবিনুর ১০০০, আমিন উদ্দিন ৩০০০, হরযদ ১০০০,  হাবিজুল ১০০০, জয়নব ১০০০, মামী ৫০০, ইসাদ্দির ২০,০০০। এরা প্রতিনিয়তই মাদক বিক্রিতে সহায়তা করে হাতিয়ে নিচ্ছে অগনিত টাকা।

ওইদিন অভিযানের এক পর্যায়ে উপস্থিত হন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক ওবায়দুল কবির। তিনি জানান, আমি এ মাসেই জয়েন করেছি। এসব বিষয়ে জানা নেই। তবে আপনারা সহযোগীতা করবেন। আমাদের সংস্থার কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এখানেও প্রশ্ন উঠেছে, র‌্যাব অভিযান চালানোর পর তিনি এলেন , আগে কেন ব্যবস্থা নিলেন না। প্রসঙ্গত, এ অধিদপ্তরের কতিপয় সদস্য নিয়মিত ঘুরে ঘুরে মাদক বিক্রেতাদের কাছ থেকে বখরা নেয়। এর সাবেক এসআই আয়াত আলীর ৪টি বাড়ি রয়েছে শুধু ফতুল্লাতেই।

এ ব্যপারে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল ক) মো. মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী বলেছেন, ডায়েরীতে যাদের নাম আসছে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। বিশেষ করে পুলিশের যাদের নাম এসেছে তাদের ব্যপারে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও বিধি অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বিভিন্ন জায়গায় মাদক বিরোধী অভিযান চলছে, তা অব্যাহত থাকবে।

এ ব্যপারে র‌্যাব-১১ এর কমান্ডিং অফিসার মেজর আশিক বিল্লা বলেন, আমাদের মাদক বিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। জেনেভা ক্যাম্পে আমাদের সফল একটি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। আমরা নারায়ণগঞ্জেও মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছি। চাঁনমারীতেও অভিযান হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ থকে মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

add-content

আরও খবর

পঠিত