নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (বন্দর প্রতিনিধি) : বন্দরে নূরবাগ এলাকায় মাদকসেবনকালে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে দত্তবাড়ির উশৃঙ্খল মাদকসেবী সন্ত্রাসীদের দ্বিতীয় দফা হামলায় বাড়িঘর ভাংচুর ও স্বর্ণ অলংকার লুটসহ আহত ৫জন। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হামলায় রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের নারায়ণগঞ্জ জেনারারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতরা হলেন নূরবাগ এলাকার আব্দুল জব্বার মিয়ার ছেলে মোঃ রুবেল, একই এলাকার মাহমুদ খানের ছেলে সুজন,রশিদ,নাছির, রাকিব, রনি। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার রাত ১০টায় নাসিক ২২নং ওয়ার্ড নূরবাগ এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকালে দত্তবাড়ির কিছু উশৃঙ্খল যুবক নূরবাগ এলাকায় এসে মাদকসেবনের চেষ্টা করে এতে এলাকার কয়েকজন যুবক মাদক সেবনে তাদের বাধা দিলে মাদক সেবনকারীদের সাথে প্রতিবাদী যুবকদের বাকবিতন্ডা হয়। পরে দত্তবাড়ি এলাকার আক্তার হোসেনর ছেলে মাদকসেবী সাজু, রিয়াজুলের ছেলে আকাশ ও সানির নেতৃত্বে ৪০/৫০ জনের একদল সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রথম দফায় হামলা চালায় এবং বৃষ্টির মত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। হামলাকারীদের ইটের আঘাতে পথচারিসহ বেশ কয়েকজন নারী আহত হন। সকালের প্রথম দফার হামলার ঘটনায় নূরবাগ এলাকা থেকে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে এসআই হাফিজুর রহমান ও অজয় কুমার পালের নেতৃত্বে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বিষয়টি মিমাংসার জন্য দুই পক্ষের স্থানীয়দের দায়ীত্ব দেন। এর কয়েক ঘন্টা না যেতেই দত্তবাড়ির মাদকসেবী সন্ত্রাসীরা সুপরিকল্পিতভাবে রাত ১০টায় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া নূরবাগ এলাকায় প্রবেশ করিয়া আবারও দ্বিতীয় দফা হমলা চালিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালায়। এসময় সসস্ত্র হামলাকারীরা নূরবাগ মতিনের বাড়িঘর ব্যাপক ভাংচুরসহ ঘরের আলমারিতে থাকা স্বর্ণ অলংকার ও নগদ ২৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়াগেছে। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রেরর কুপের আঘাতে রুবেলের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর তার মাথায় ১৬টি সেলাই দেয়া হয়েছে এবং রশিদের হাতে ৬টি,সুজনের পায়ে ৪টি সেলাই দেয়া হয়েছে বলে আহতরা জানান।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে জানা যায়, বন্দর শাহী মসজিদস্থ টেটনা বাড়ির কথিত ছাত্রলীগ নেতা মাইনুর ইন্ধনে দ্বিতীয় দফা এসন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। মাঈনুদ্দিন ওরফে টেটনা মানুকে মাদকের সেল্টার দাতা ও চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে সন্ত্রাসী মাইনুর বিচারের দাবী জানান ভুক্তভুগীরা। এলাকাবাসী আরও জানায়, সন্ত্রাসী মাইনুর নেতৃত্বে দত্তবাড়ি এলাকার মাদকসেবীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন এক বিশাল সন্ত্রাসীর রামরাজত্ব। সন্ত্রাসী মাইনুর সেল্টারেই দত্তবাড়ি, শাহী মসজিদ, সালেহ নগরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চলছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য।
সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নূরবাগ ও দত্তবাড়ি উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়েছে। এঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে থমথমে বিরাজ করছে আবারও যেকোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষীয় সংঘর্ষের ঘটনা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বন্দর থানার এসআই আল মামুন ও ফাঁড়ির ইনচার্জ শফিক আহমেদের নেতৃত্বে রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য নাসিক ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহমেদ ও ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকারকে দায়ীত্ব দেয়া হয়। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয় পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয় । সোমবার সকালে শাহী মসজিদ এলাকার নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতিয় পার্টির অফিসে বিষয়টি মিমাংসা করা হবে বলে স্থানীয়রা জানান।