নারায়ণগহ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর সংবাদদাতা ) : নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগে কাওয়া তাড়ানোর কথা একাধিকবার বললেও শর্ষের মধ্যেই ভুত আছে বলে অভিযোগ তৃনমুল নেতাকর্মীদের। বন্দরে প্রায় ৯টি ওয়ার্ড জুড়েই রয়েছে এমন কাওয়া ও ফরমালিন নেতা-কর্মী। যারা মহানগর আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সমাবেশে দাবড়িয়ে বেড়ায়। বিএনপি-জামাতের প্রতিচ্ছবি নেতাকর্মীরা আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে এমনটাই আশংকা করছেন ত্যাগী তৃনমুল নেতাকর্মীরা।
তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, মহানগর আওয়ামীলীগ ব্যানার ব্যবহার করে কতিপয় ফরমালিন নেতা-কর্মীরা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদকের ছবি সম্বলিত ব্যানারে তাদের ছবি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় দাপড়িয়ে বেরাচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে ঝোপ বুঝে কুপ মারার ফন্দি এটে বড় বড় নেতাদের সাথে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে গিয়ে ফটোসেশনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অথচ আওয়ামীলীগের দূর্দিনে এদের দেখা মিলেনি। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিগত দিনে জাতীয় পার্টি কিংবা বিএনপির-জামাতের মিছিল মিটিংয়েও দেখা গেছে। এখন এরা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খোকন সাহার সাথে আওয়ামীলীগ কর্মী দাবী করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলাগাছিয়া আওয়ামীলীগের এক কর্মী জানান, মহানগর আওয়ামীলীগ শীর্ষনেতাদের ব্যবহার করে বহিরাগত ফরমালিন মার্কা কর্মীর উদয় হয়েছে। যাচাই বাছাই না করে মহানগর নেতারা এসব কর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে ত্যাগী তৃনমূল নেতাকর্মীদের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি করছেন। যা দলের জন্য মারাত্বক ক্ষতি বয়ে আনবে। এখনই এসব আগাছা পরিষ্কার না করলে ভবিষ্যতে চরম মূল্য দিতে হবে মহানগর আওয়ামীলীগকে। ভবিষ্যৎ অনিশ্চিৎ হয়ে পড়বে মহানগর আওয়ামীলীগ নেতাদের।
জনৈক এক শিক্ষক জানান,বন্দরে কি আওয়ামীলীগের আর লোক নাই। অন্য দল থেকে ভাড়া করে দল চালাতে হবে। নাকি সঠিক নেতৃত্বের অভাব। তবে কেন বিতর্কিত লোকদের টেনে দলের ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করা হচ্ছে। নাসিক ২১নং ওয়ার্ড’স্থ ছালেনগর এলাকার এক সময়ের তুখুর বিএনপি নেত্রী মায়ানুর বেগম এখন নাকি ২১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি। এই মায়ানুরকে বিগত দিনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের ব্যানারে বিভিন্ন স্থানে মহিলা দলনেত্রী হিসেবে ফেস্টুন-ব্যানার সাটিয়ে প্রচার করতে দেখা গেছে।
বন্দর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপিনেত্রী এ্যাডভোকেট মাহমুদা আক্তারের নেতৃত্বে তৈমুর আলম খন্দকারের পক্ষে বিভিন্ন সময়ে মিছিল-মিটিংয়ে দেখা গেছে। পরে তিনি তার স্বার্থের জন্য দল পরিবর্তন করে বিএনপিকে পল্টি দিয়ে মহানগর মহিলালীগ সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর ইসরাত জাহান খান স্মৃতির সাথে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে যোগ দেয়। পরে তেমন সুবিধা করতে না পেরে মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা মালার সাথে যোগ দেয়। অবশেষে সেই মায়ানুর মহানগর আওয়ামী লীগের মাহমুদা মালাকে ছেড়ে এখন আরজু রহমান ভূইয়ার দলে যোগ দিয়েছে। হায়রে দেশের রাজনীতি!
তিনি আরো জানান, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের হাজিপুর এলাকার জুয়েল মাহমুদ নামে আরেক কর্মী মহানগর আওয়ামীলীগকে পুজি করে ওই এলাকায় মাদক ব্যবসার সেল্টারসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেরাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকীর নাম করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ব্যাপক চাদাবাজীর অভিযোগ মিলেছে। অথচ জুয়েল তৎকালীন সময়ে ছাত্রদলের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ছিল। এক সময় কল্যান্দি এলাকার বিএনপিনেতা আহাম্মদ মিয়ার মিটিং মিছিলে তাকে প্রায়ই দেখা যেত। বন্দর থানা সাবেক ছাত্রদল সভাপতি মহিউদ্দিন শিশিরের সাথেও তার বেশ সখ্যতা রয়েছে। এখন ভোল পাল্টে সে আপন স্বার্থ চরিতার্থ করার নেশায় মহানগর আওয়ামীলীগে ছদ্মবরনে আছে।
আওয়ামীলীগে ছদ্মবরনে অনুপ্রবেশ করা এসব আগাছা অনতিবিলম্ভে উৎপাটন করতে মহানগর আওয়ামীলীগের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করছে তৃনমুল নেতাকর্মী।