নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর প্রতিনিধি ) : পুলিশ জনগণের বন্ধু এ শ্লোগানটি ব্যানার ফেষ্টুনে শোভা পেলেও বাস্তবে ঘটছে তার উল্টোটা, এমনই একটি ঘটনার জন্ম দিয়েছে জালাল, নাছির ও শহীদুল নামে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার অর্থলোভী ৩ সহকারি দারোগা।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ টি হোসেন রোড এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে জাবেদ হোসেন (২৩) গত সোমবার (৩০ এপ্রিল) শবে বরাতের সদাই কেনার জন্য রাতে বাসা থেকে বের হয়, সদাই কেনার জন্য বন্দর বাজারে আসে। রাত ১০টায় সদাই কিনে অটোযোগে বাড়ি যাওয়ার পথে বন্দর থানার সহকারি দারোগা জালাল, নাছির ও শহীদুল সাদা পোশাকে ইজিবাইকের গতিরোধ করে। দারোগাদের ভয়ে ইজিবাইকের অন্যান্য যাত্রীরা নেমে গেলে দারোগা জালাল ও নাছির সিএনজি চালক জাবেদকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে তার পকেটে ইয়াবা ঢুকানোর চেষ্টা করে।
এ সময় জাবেদের ডাক চিৎকারে আশ পাশের লোকজন ছুটে এলে জাবেদ ওয়ারেন্টের আসামী বলে অবহিত করলে জনতা যার যার মতো চলে যায়। এই সুযোগে সাদা পোশাকধারীরা তাদের হোন্ডায় করে জাবেদকে সোনাকান্দা হাট এলাকার টর্চার সেলে নিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে সিলিংয়ে ঝুলিয়ে হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার রড দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে ২লাখ টাকা দাবি করে। দারোগাদের দাবিকৃত ২লাখ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তারা জাবেদের উপর চালায় অত্যাচারের স্টীমরোলার। অত্যাচারের নির্মম যন্ত্রণায় জাবেদ হাউ মাউ করে চিৎকার করলে সোনাকান্দা হাট সংলগ্ন এলাকার প্রায় ২০/৩০জন বাসিন্দা জাবেদকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে জালাল নিজেকে বন্দর থানার ওসি এবং নাছির সেকেন্ড অফিসার পরিচয় দিয়ে তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়।
ভয়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে স্থানীয় এক সচেতন নাগরিক বন্দর থানার জনৈক সিনিয়র একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে অবহিত করলে উল্লেখিত ওই কর্মকর্তা দ্রুত সোনাকান্দার ওই টর্চার সেল থেকে জাবেদকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে একটি রিকশায় করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাড়িতে যাওয়ার পর জাবেদের অবস্থার অবনতি ঘটলে স্বজনরা তাকে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান পরবর্তীতে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত জাবেদের আশংকা কাটেনি। এদিকে জাবেদের পরিবারের দাবি, জাবেদ একজন অত্যন্ত নিরপরাধ মানুষ। মামলায় ফাঁসানোর ও ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে ২লাখ টাকা না পেয়ে তারা আইনের লোক হয়ে একজন নিরপরাধ যুবককে হত্যার চেষ্টায় বেদম পিটালো, আমরা ওই ৩পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার চাই।
পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার প্রতি জোরদাবি, পুলিশের কলংক জালাল, নাছির ও শহীদুলের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক অনতিবিলম্ভে কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়া হোক।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম শাহিন মন্ডলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, বিষয়টি শুনেছি তবে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে জাবেদ সম্ভবত একজন মাদক ব্যবসায়ী। তবুও আমি নিজে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো যদি আমার পুলিশ দোষী হয় তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যা যা করার দরকার করবো।
উল্লেখ্য, এর আগেও ভাইয়া গ্রুপের সদস্য জালাল মাহ্মুদনগর এলাকার কুখ্যাত মাদক সম্রাট শিপনের স্ত্রীকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আটকের পর লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়।