ফতুল্লায় বিআইডিব্লিউটিএর অভিযানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ফতুল্লা সংবাদদাতা ) : ফতুল্লার পাগলা মুন্সিখোলা এলাকায় দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে বিআইডিব্লিউটিএ। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত নদীর তীরবর্তী জায়গা বালু ফেলে ভরাট করে গড়ে উঠা কাঁচা, পাকা ও আধাপাকা শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

বিআইডিব্লিউটিএর নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট শামীম বানু শান্তির নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযানে ফতুল্লা থানা পুলিশ ও বিপুল সংখ্যক আনসার বাহিনীর সদস্য অংশ নেয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিআইডিব্লউটি এর সদরঘাট বন্দরের যুগ্ম-পরিচালক আরিফ উদ্দিন ও ফতুল্লা থানার ওসি এস এম মঞ্জুর কাদেরসহ বিআইডব্লিউটিএর অন্যান্য কর্মকর্তারা।

উচ্ছেদ অভিযানের সময় নদীর সীমানা পিলারের অভ্যন্তরে ঢুকে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করায় ওয়াহিদ এন্ড ব্রাদাসের পাচঁফুট প্রশস্ত এবং দেড়শ ফুট লম্বা স্থাপনা ভেকু দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়। এছাড়া আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমমের পাকা স্থাপনার পেছনে ওয়াকওয়ে দখল করে গড়ে তোলা দুটি টিনসেট স্থাপনা ও একটি ইটের দেয়াল ভেঙ্গে দেয়া হয়। পাশের আরো কয়েকটি স্থাপনা ও মাটি ভরাট করায় তা খনন করে মাটি অপসারন করা হয়।

পরে পাগলা বাজার এলাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীর দখল করে গড়ে উঠা রশিদ এন্টারপ্রাইজের দখলে থাকা একটি জেটি, ভরাটকৃত মাটি অপসারন ও কয়েটি টিনসেড স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

বিআইডিব্লিউটিএর সদরঘাট নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক আরিফ উদ্দিন জানান, চারদিন ব্যাপি উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দিনে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। পাগলা মুন্সিখোলা থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদীর র্তীর ও ওয়াকওয়ে দখল করে গড়ে উঠা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গা নদীর পোস্তগোলা থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত ১২ কোটি টাকা ব্যায়ে দৃষ্টিনন্দন ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।

কিন্তু প্রভাশালী ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা বালু, পাথর, ইট, সুরকী, কয়লা, গাছের গুড়ি ফেলে ওয়াকওয়ে দখল করে রেখেছে। আবার কোথাও কোথাও রেলিং ভেঙ্গে গাছের গুড়ি গেড়ে বালু ইট সুরকী ফেলে নদী ভরাট করে এবং বাশের খুটিগেড়ে জেটি বানিয়ে মালামাল লোড আনলোড করে আসছে। যার কারনে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওয়াকওয়ে ব্যবহারের সম্পূর্ণ অনুপযোগী ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তিনি জানান, সম্প্রতি ওয়াকওয়ে ভাঙ্গা ও নদীর র্তীরবর্তী জায়গা ভরাটের অভিযোগে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে সাধারন ডায়রি করা হয়েছে। পরিবর্তিতে এসব দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উচ্ছেদ অভিযান শেষে বিআইডিব্লিউটিএর নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট শামীম বানু শান্তি জানান, পাগলা মুন্সিখোলা ওয়াকওয়ের নদীর র্তীরের অংশে ৭ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবৈধ দখলদারদের জেল জরিমানাও করা হচ্ছে। এ ছাড়া ১৫ শতাংশ জমি ইট, বালু দিয়ে ভরাট করে সেখানে বালু পাথর ব্যবসার একটি প্রতিষ্ঠানের দখল করা যায়গা খনন করে নদী পানির সাথে সংযোগ করে দেয়া হয়। ওই স্থানে রাখা বালু ও পাথর জব্দ করে নিলামে বিক্রি করা হয়। এসময় দুইজনকে আটক করে উচ্ছেদ করা দলের সদস্যরা।

তিনি আরো জানান, বুড়িগঙ্গা নদীর সীমানা প্রাচীরের ভেতরে ঢুকে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করায় ওয়াহিদ এন্ড ব্রাদাসের দেড়শ ফুট লম্বা ও পাচঁফুট প্রশস্ত পাকা স্থাপনার ভেঙ্গে দেয়া হয়। এছাড়া পাগলা বাজারে নদীর র্তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় রশিদ এন্টারপ্রাইজের স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়। তিনি জানান, এ টানা চারদিন এই উচ্ছেদ অভিযান চলবে। এই উচ্ছেদ অভিযানের আওতায় যে সব অবৈধ স্থাপনা পড়বে তা সবই উচ্ছেদ করা হবে।

add-content

আরও খবর

পঠিত