নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক বেশ কিছুদিন ধরে নজরদারিতে থাকার পর, প্রমাণ পেয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ। ১৮ই এপ্রিল দুপুরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় একথা বলেন তিনি।
হারুন অর রশীদ বলেন, তার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, রেজিস্ট্রার অফিসে হামলা, ভাংচুরসহ অনেকগুলো মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছিল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম, পাশাপাশি এসব মামলার তদন্ত করছিলাম। তদন্তে তার সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতারের পর আজ তাকে মোহাম্মদপুর থানায় রাখা হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তার রিমান্ড চাওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের তাণ্ডবের বিষয়ে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না?- এমন প্রশ্নে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সেদিনের ঘটনা আপনারা সবাই দেখেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ই মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করে হেফাজতে ইসলাম। মোদির বিরোধিতায় প্রথমে ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভে সহিংসতা হয়, তার জেরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাণঘাতী সংঘাত হয়। যার জেরে ২৮ মার্চ হরতাল ডাকে হেফাজত, ওই হরতালকে ঘিরে চরম নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয় সারাদেশে।
এরপর গত ৩ই এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে ঘেরাও করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, মামুনুল এক নারীসহ আটক হয়েছেন। যদিও ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন মামুনুল হক। ওইদিন সন্ধ্যায় রিসোর্ট থেকে তাকে ছাড়িয়ে স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়ে যান হেফাজত নেতাকর্মীরা।
হেফাজতের নেতাকর্মীরা রিসোর্ট, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়, বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। এছাড়া তারা ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে।
ওইদিন পুলিশের ওপর হামলা ও রিসোর্টে ভাঙচুরের অভিযোগে মামুনুল হকসহ ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়। এছাড়া মামলায় ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামিও করা হয়।
এ মামলায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা ও রিসোর্টে ভাংচুরের অভিযোগ এনে ৪১ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত ২৫০–৩০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে।
এছাড়া যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আরেকটি মামলাটি করা হয়। এ মামলায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ ও ২৫০/৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এ মামলায় হেফাজতে ইসলাম, জাতীয় পার্টি ও বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ রয়েছে।