পু‌লি‌শের বিরু‌দ্ধে বিএন‌পির মামলার আবেদন খা‌রিজ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জে বিএন‌পি-পুলিশ সংঘর্ষে শাওন প্রধানের মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপির মামলার আবেদন ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৩ ধারায় খারিজ করে দিয়েছে আদালত। রবিবার বিকেলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান এই তথ্য জানান।

এর আগে সকালে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে জেলার পুলিশ সুপারসহ ৪২ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করে এ মামলার আবেদন করেন।

আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, বিচারিক হাকিম ইমরান মোল্লা বাদীর শুনানি নিয়ে বিষয়টি আদেশের অপেক্ষায় রেখেছিলেন। পরে ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৩ ধারায় আদালত মামলাটি খারিজ করে আদেশ দেন।

মামলার আবেদন খারিজের প্রতিক্রিয়ায় বাদীর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, মামলা আমলে নেওয়ার মতো কোন কারণ ছিল না উল্লেখ করে আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। আমাদের মন্তব্য হলো, প্রাথমিক মামলা থাকার পরও অদৃশ্য কোন চাপের কারণে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট অপরাধ আমলে নিলেন না। আলোচনা করে আমরা এই বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবো।

মামলার আবেদনে বিবাদীগণ দায়িত্ব অবহেলা করে স্থানীয় সরকারদলীয় নেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিরস্ত্র ও শান্তিকামী নেতা-কর্মীদের উপর বেপরোয়াভাবে শান্তিপূর্ণ র‌্যালিতে গুলি, টিয়ারশেল, রাবার বুলেট, লাঠিচার্জ করে শাওনকে নিহত করে, অন্যান্য নেতা-কর্মীদের আহত করে দন্ডবিধির ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৩০২/৩৪ ধারায় অপরাধ করেছে বলে বাদী উল্লেখ করেন।

মামলার আবেদন করার পর বাদীর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, পহেলা সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল। সারাদেশে বিএনপি শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জসহ কিছু জায়গায় পুলিশ বিনা কারণে উসকানি দিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলে সরাসরি গুলি করেছে। এতে বহু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন এবং যুবদলের কর্মী শাওন বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। মিডিয়া, পত্রিকা এবং সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের কাছ থেকে জেনে আদালতে এ মামলা দায়ের করলাম। এই মামলায় পুলিশের এসআই কনক, যার গুলিতে শাওন নিহত হয়েছেন, তাকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশ সুপার, তিনজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর মডেল থানার ওসিসহ মোট ৪২ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।

আসামির তালিকায় যাদের নাম আছে, তারা হলেন- ডিবির এসআই মাহফুজুর রহমান কনক, সদর থানার ওসি আনিচুর রহমান মোল্লা, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ অঞ্চল) নাজমুল আলম, এসআই কামরুজ্জামান, ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু, কনস্টেবল শাহরুল আলম, মো. সোহাগ, মো. আরিফ দেওয়ান, ফেরদৌস দেওয়ান, সেলিম, রিপন, যুগল, মামুন, রিয়াজ, হাফিজ, এএসআই ইকবাল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, সোহরাব, কনস্টেবল জাকির হোসেন, নাঈম, রাকিব, আনিস, সাইদুল, ইনজামামুল, রাসেল, খলিলুর রহমান, মোহসীন মিয়া, মোস্তাকিম, শাহাদাত হোসেন, ফখরুল ইসলাম, আরিফ দেওয়ান, দীপক সাহা, শাহীন, ফরিদ উদ্দিন, মুরাদুজ্জামান, শাহীন, কবির হোসেন, মান্নান, রুবেল, সোহাগ।

এই ৪২ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় আরও একশ থেকে দেড়শ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে মামলায়।

add-content

আরও খবর

পঠিত