নারায়ণগঞ্জ সোনালী ব্যাংকে ১০১ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি !

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ সংবাদ দাতা ) : নারায়ণগঞ্জে এবার সোনালী ব্যাংক এর প্রায় ১০১ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি ঘটনায় শহর জুড়ে বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানই নেই তবে অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় শত কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি করে লাপাত্তা ঋণ গ্রহিতারা। ব্যাংক কতৃপক্ষকে ফাকিঁ দিয়ে কাগজে কলমে বিদেশ পলাতক দেখানো হলেও অথচ তারা রয়েছে দেশেই। এমন ঘটনার পর টক অব দ্যা টাউনে শুধু সোনলী ব্যাংক এর বিষয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

জানা গেছে, ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ১০১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ঋণ জালিয়াতী ওই চক্র। চাষাঢ়াস্থ সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে প্রতারণা করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার এই অভিযোগ উঠেছে কথিত এইচ এস ফ্যাশন এর মালিক মনিরুল ইসলাম এবং কথিত মুন নিটওয়ার এর মালিক রফিকুল ইসলাম নামের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিসিক এলাকায় ১০ শতাংশ এবং ধর্মগঞ্জের পঞ্জবটি এলাকায় ২২ শতাংশ জমি ব্যাংকের নিকট বন্ধক রেখে ১ শত ১ কোটি ৪১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা একই পরিবারের দুই ভাই মনিরুল ও রফিকুলকে দেয়া হয়। কিন্তু ঠিকানা অনুযায়ী গেলে উল্লেখিত নামে আদৌ কোন শিল্পকারখানা ছিল না বলে জানায় স্থানীয়রা।

স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তির সাথে কথা হলে তারা জানান, উল্লেখিত নামের কোন কারখানা এখানে নেই। বিসিক এলাকার কর্মরত কয়েকজন পুরনো শ্রমিক ও নিরাপত্তা কর্মী জানান, যে নামটি ব্যবহার করেছে তা ছিল একটি সাজানো। বর্তমানে ওইসবস্থানে অন্যসব কারখানা চলছে।

এদিকে গত বছর ডিসেম্বর মাসে একাধিক জাতীয় এবং স্থানীয় পত্রিকায় শিরোনাম হয় ব্যাংকের খাতায় বিদেশে পলাতক, অথচ আছেন দেশেই এমন সংবাদ প্রচার হলে নারায়ণগঞ্জের সোনালী ব্যাংকের কতিপয় কর্মকর্তাদের জালিয়াতির বিষয়টি ফাঁস হতে থাকে। আর সংবাদ প্রকাশের পর ঘটনার অন্তরালে জানতে চেষ্টা করে প্রতিবেদক। এ ঘটনায় যুগ্ম জেলা জজ অর্থঋণ আদালতেও ২ টি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানায় সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা ডি জি এম মো. ইয়াছিন এবং এজি এম পঙ্কজ কুমার সাথে কথা বলতে চাইলে কর্তৃপক্ষের নিষেধ দাবী করে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি। দোষারোপ করছেন একে অপরকেই। তবে তারা জানান, ঋণ গ্রহিতাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। আসামীরা পলাতক।

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার আব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল বলেন, ব্যাংক কর্মর্কতাদের যোগসাজসে নাম সর্বস্ব লোকদের ঋণ দেয়া হয়। ভবিষ্যতে যাতে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়া হয় এমনটাই দাবি জানান। তাছাড়া এভাবে রাষ্ট্রিয় অর্থ লুটপাট করা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এজন্য দায়ীদের শাস্তি দেয়া দরকার।

শুধু তাই নয়, আরো ৮০ জন ঋণ খেলাপীর কাছ থেকে ১১ শ ৭ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে কাের্পরেট শাখার সোনালী ব্যাংক, যাদের বিরুদ্ধে মামলাও চলমান। তবে এমন ঘটনায় ব্যাংক এর আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি আবারও সামনে চলে এসেছে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

add-content

আরও খবর

পঠিত