নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : প্রকাশ্যে নসিমন চালককে পিটিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় সোনারগাঁ পৌরসভার সেই মেয়র ও বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কেন্দ্রিয় কমিটির সভাপতি সাদেকুর রহমানকে আটক করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আটকের পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবদ করা হচ্ছে বলে ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়।
সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে মেয়র সাদেকুরের নিজ বাড়ি সোনারগাঁয়ের গোয়ালদী থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেস নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক সাজ্জাদ নোমান।
উল্লেখ্য, ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মহাজোটের প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার পক্ষে গণসংযোগ করে নিজ গাড়িতে বাসায় ফিরছিলেন সাদেকুর রহমান।
সোনারগাঁ জাদুঘরের সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা বাঁশ বোঝাই নসিমনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে মেয়রের গাড়ি সামান্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাদেকুর রহমান গাড়ি থেকে নেমে নিজের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে ওই যুবককে মারতে শুরু করেন। ওই যুবক অপরাধ স্বীকার করে মেয়রের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েও রক্ষা পাননি।
পরবর্তীতে মেয়রের সমর্থকেরাও ওই যুবককে মারধর করে গাড়িসহ তাকে আটক করে রাখে। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পর মেয়র সাদেকুর রহমান বাসায় ফেরার পথে আটক দু’জনকে ছেড়ে দেন।
পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। নির্যাতিত জামাল হোসেন উপজেলার পরমশ্বেরদী গ্রামের খবিরউদ্দিনের ছেলে। তিনি পৌর এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে বসবাস করেন।
ছেড়ে দেওয়ার পর নির্যাতিতদের স্থানীয় যুবক রিপন খান প্রাথমিক চিকিৎসা করান। পরে তাদের পরিবার সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। শুরু হয় নিন্দার ঝড়। এ ঘটনায় জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সবখানে মেয়রের শাস্তি দাবি উঠে।
পরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের নির্দেশে সোমবার দিবাগত রাতে নিজ বাসা থেকে পৌর মেয়র সাদেকুর রহমানকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমান দাবি করেন, নসিমন চালক ও তার ভাগিনাকে মারধরের ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করে তাদের কাছে মাফ চেয়েছেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে আটক করা গাড়িসহ তাদের ছাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে রাজনৈতিকভাবে স্বার্থ উদ্ধারের জন্য একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক সাজ্জাদ নোমান জানান, সোনারগাঁ পৌর মেয়র নসিমন চালক ও তার ভাগিনাকে নির্যাতনের ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এ বিষয়টি পুলিশ সুপারের নজরে এলে তার নির্দেশে তাকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে মেয়রকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।