নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধ বাড়িয়ে ২৩ই মে মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়েছে। গণপরিবহন চালু করলেও সরকার ঈদের পর দূরপাল্লার বাস ছাড়ার অনুমোদন দেয়নি। ফলে আগের মতোই বন্ধ থাকছে দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আন্ত:জেলা বাস, যাত্রীবাহী ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল করবে কি না তা ১৭ই থেকে ২৩ই মে পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
সর্বশেষ ১৬ই মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল বিধিনিষেধের মেয়াদ। কিন্তু বাংলাদেশে হঠাৎ করেই ভারতের করোনা স্ট্রেইর দেখা দেয়ার পর এবং করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় সরকার লকডাউনের মেয়াদ ফের বাড়িয়ে ২৩ মে পর্যন্ত করে।
এদিকে দূরপাল্লার বাস চলাচলের অনুমতি না দেওয়ায় ঈদুল ফিতরের দিন রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। ঈদ শেষে এখনও যদি দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয় তাহলে তারা আবার আন্দোলনে যাবেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী জানান, সোমবার সড়কমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর কাছে পাঁচটি দাবি সম্বলিত চিঠি দেয়া হবে। কাজ না হলে প্রতীকী অনশন, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, ঈদে বাড়ি যাওয়া যাত্রীদের ঢাকায় ফেরার জন্য দূরপাল্লার বাস চালু করা উচিত ছিল। তা না করায় আবারও আন্দোলনে যাবেন তারা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূরপাল্লার গণপরিবহন চালু হলে করোনা সংক্রমণ বাড়বে। এ বিষয়ে সরকারের নীতি নির্ধারকরাও একমত। কিন্তু পরিবহন খাতের শীর্ষ নেতাদের আহ্বানে দূরপাল্লার বাস চালুর দাবিতে গত শুক্রবার (১৪ মে) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে পরিবহন শ্রমিকরা বিভিন্ন বাস ও ট্রাক টার্মিনালে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
সড়ক পরিবহন খাতের নেতারা বলছেন, করোনায় বিধিনিষেধের মধ্যেও মার্কেট, শপিংমলসহ সব কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গণপরিবহন চালুর ক্ষেত্রে নানা তালবাহানা চলছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ৫০ লাখ পরিবহন শ্রমিক।
বাস না ছাড়লে ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহনে সবাই গাদাগাদি করে ঢাকায় ফিরবে। তাতে কি করোনার সংক্রমণ কমবে? এমনই প্রশ্ন করেন পরিবহন শ্রমিকের নেতারা।
পরিবহন শ্রমিকদের দেয়া দাবিসমূহ হলো :
১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার পরিবহনসহ সব গণপরিবহন এবং স্বাভাবিক পণ্যবাহী পরিবহন চলাচলের সুযোগ দিতে হবে।
২. লকডাউনের কারণে কর্মহীন সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের ঈদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করা ও লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মালিকদের যানবাহন মেরামত, কর্মচারী ও শ্রমিকের বেতন, ভাতা ও বোনাস ইত্যাদি দেয়ার জন্য নামমাত্র সুদ ও সহজ শর্তে পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিতে হবে।
৩. সারা দেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোয় পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকায় ওএমএসের চাল বিক্রির ব্যবস্থা করা।
৪. কোভিড-১৯ এর কারণে গণপরিবহন ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগের বিপরীতে সব ব্যাংক ঋণ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ মওকুফসহ কিস্তি চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করা। পাশাপাশি ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে শ্রেণিকৃত ঋণগুলো নিয়মিত করার সুযোগ দিতে হবে।
৫. বিধিনিষেধে বন্ধ থাকার সময় গাড়ির ট্যাক্স-টোকেন, রুট পারমিট ফি, আয়করসহ সব ধরনের ফি, কর ও জরিমানা মওকুফ করে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাগজপত্র হালনাগাদের সুযোগ দিতে হবে।