নারায়ণগঞ্জ বার্তা ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জে উন্নয়নের মডেলের পাশে ডিএনডি বাধের অভ্যন্তরীণ এলাকাগুলি যেন অভিশাপে পরিণত হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই বন্যায় ভাসমান হয়ে যায় পুরো এলাকা। এ জলাবদ্ধতাই যেন জনসাধারনের চিরসঙ্গী। বিশেষ করে ডিএনডিবাসীর এই দূর্ভোগের জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে ওইসব এলাকার ডাইং কারখানাগুলো। তবে দেখার অনেকই আছে, কিন্তু উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহনে নেই কারো যথাযথ উদ্যোগ। তাই তো এখনো কাঁদে ডিএনডিবাসী।
ফতুল্লা ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত কুতুবপুর, কাইয়ূমপুর, লালপুর, পৌষারপুকুরপাড়, গাবতলী, টাগারপাড়, ইসদাইরসহ সিদ্ধিরগঞ্জের অনেক এলাকায় এখনও জলাবদ্ধতা হয়ে থাকে। বিভিন্নস্থানে হাটু পািনতে চলাচল ও ডুবে গেছে মলত্যাগ করার স্থান, এমন দৃশ্য নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন অলি-গলিতে পানি জমে থাকায় ওই পথে চলাচলকারী চাকুরিজীবী, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সহ সাধারণ মানুষ দূর্বিষহ পোহাচ্ছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে খাদে পড়ে যাওয়া সহ নানা র্দূঘটনা, এই সড়কের একটু সামনে এগুলেই যেন হতে হচ্ছে নতুন কোন বিপদের সম্মূখীন।
এদিকে, কিছুদিন আগে প্রাকৃতিক দূর্যোগ ইয়াস এর কারণে গত কয়দিন সারাদেশে মত নারায়ণগঞ্জেও সব এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হয়েছিল। এতে করে ডিএনডির বিভিন্ন এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে জলাবদ্ধতা। লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে র্বষার আশংকায় নতুন করে এ আতংক ডিএনডিবাসীর কাছে বিরাজমান। আর অল্প বৃষ্টিতেই প্রতিনিয়তই ডাইংয়ের কেমিক্যাল মিশ্রিত বিষাক্ত পানিতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ স্থানীয়রা।
এসব বিষয়ে কথা হলে ভুক্তভোগী কয়েকজন বাড়ির মালিকও দু:খ করে বলেন, এখানে বাড়ি করেও বিপদে আছি। ভাড়াটিয়ারা আসে আর যায়। বেশীর ভাগ সময়ই ভাড়াটিয় ছাড়াই পরে থাকে বাসা। অল্প বৃষ্টির পানিতেই জলাবদ্ধতার কারণে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে পয়োবর্জ্য। দেখা দেয় বিশুদ্ধ পানির অভাবও। আর যারা নিচুতে আছে টিনসেড কিংবা একতলা ঘরে বসবাস করে তারাতো আরো কষ্টে আছে। পানির মাঝেই তাদের চলাফেরা, রান্না-বান্নাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে নেমে এসেছে নানা ভোগান্তি। ফলে নানা ভোগান্তিতে নাকাল ডিএনডিবাসী’র মাঝে এখনো কান্নাই বড় সম্বল।
টিনশেড ঘরে থাকা আমেনা নামে এক ভাড়াটিয়া বলেন, কিছুদিন আগে র্ঘণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে আমরা অনেক কষ্টে ছিলাম। ঘরের ভিতরে পানি জমে ছিল। এই পানি পাড়িয়েই রান্না, খাওয়া সব সারতে হয়েছে। এখন কিছুটা পানি কমলেও, এখন বর্ষাকাল তা নিয়েই চিন্তায় আছি। গতকালও বৃষ্টি হয়েছে, এভাবে আর কিছুদিন অতিমাত্রায় বৃষ্টি হলে হয়তো ঘর ছেড়ে অন্যত্রে ছুটতে হবে।
অন্যদিকে স্থানীয় নুরুল ইসলাম সচেতনতার অভাবকে দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডিএনডি প্রকল্পের কাজ চলছে। তারা পানি নিষ্কাশনের জন্য নানা মুখী উদ্যোগ নিয়েছে। তবে আমাদের এখানে যেসকল কারখানা মালিক রয়েছে আর বাড়ির মালিক রয়েছে তারা সচেতন না। তাদের অসচেতনতার কারণে এ জলাবদ্ধতা নিরসনে কোন সুরাহ হচ্ছে না। একদিকে ডাইং কারখানার পািন, অন্যদিকে বাসা বাড়ির ময়লা, পলিথিন ফেলে ড্রেন আটকে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এসব র্বজ্য পরিষ্কার করতেও আবার কেউ এগিয়ে আসেনা। যেকারণে পািন জমে গিয়ে বিভিন্ন ঘরে ও সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।