নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রির্পোটার ) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে দুইটি বাড়িতে অভিযান চালায় আইন-শৃংখলা বাহিনী। সেই অভিযানে একটি বাড়িতে অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির সহকারী কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম। ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুর ১২ টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন তিনি। এর পনের মিনিট পরে সাংবাদিকদের সাথে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা তিনি জানান।
ডিএমপির সহকারী কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট প্রধান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোরে আটক ফরিদ উদ্দিন রুমি, জামাল উদ্দিন রফিক ও জান্নাতুল ফুয়ারা অনু নব্য জেএমবির সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বসতবাড়ি থেকে আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, একই এলাকায় তাদের আরেকটি পরিত্যক্ত টিনশেড বাড়িতে গোপনে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। পাশাপাশি বাড়িটিতে বোমা তৈরির ল্যাব আছে এবং ওইখানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম মজুদ আছে। পরে তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই বাড়িতে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ও রোবট পাঠিয়ে পর্যবেক্ষণ করে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, এর আগে রাজধানীতে পাঁচটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে যেসব বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া গেছে এই অভিযানে একই আলামত মিলেছে। বাড়িতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, সোয়াত ও বোম্ব ডিসপোজাল টিম এখনো পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বের হয়ে আসার পর অভিযান সমাপ্ত হলে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।
এছাড়া এদিকে ফতুল্লার তক্কার মাঠ এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও সোয়াত সদস্যরা। সোমবার মধ্যরাত থেকে বাড়িটি ঘিরে রেখেছে বলে গণমাধ্যমকে সকালে নিশ্চিত করেন ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আসলাম হোসেন।
পরে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে জানান, ফতুল্লায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জয়নাল আবেদিনের একটি টিনশেড বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যদের সাথে জেলা পুলিশের সদস্যরাও সহযোগিতা করছে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা জানান, ওই বাড়িটি থেকে জঙ্গি সন্দেহে জয়নাল আবেদিনের দুই ছেলে ও এক পুত্রবূকে আটক করা হয়েছে।
আটক তিনজন হলেন আহসানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক ফরিদউদ্দিন রুমি (২৭), যন্ত্রকৌশলী জামালউদ্দিন রফিক (২৩) ও ফরিদউদ্দিনের স্ত্রী অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা জান্নাতুল ফোয়ারা ওরফে অনু (২৭)। জামালউদ্দিন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়র (কুয়েট) থেকে পড়ালেখা শেষ করে এখন বাড়িতে থাকেন।
আটকের পরে তাদের বাড়িটিতে কোন বিস্ফোরক দ্রব্য বা এক্সক্লুসিভ জাতীয় কিছু থাকতে পারে এই সন্দেহে বোমা ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়। পরে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে এসে রোবট প্রবেশ করিয়ে তাদের কাজ শুরু করে।
এদিকে ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার বেলা ১২ টা ৫৮ মিনিটে ওই বাড়ি থেকে একটি বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পাওয়া যায়। দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে আরও একটি বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পাওয়া যায়। বিস্ফোরণের শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে উঠে। ধারণা করা হচ্ছে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ওই বাড়ির ভেতরে থাকা কোন বোমা নিষ্ক্রিয় করেছে।