নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গাজী টায়ারস কারখানায় আগুনের ঘটনার দুই মাস পেরিয়েছে। ভয়াবহ আগুনের এই ঘটনায় ১৮২ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের এক তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তবে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান দিতে পারেনি প্রশাসন। এতে অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে দিন কাটানো নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২৫ আগস্ট রাতে রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় অবস্থিত প্রাক্তন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন দেশের বৃহৎ টায়ার প্রস্তুতকারী কারখানাটিতে লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সারাদিন লুটপাটের পর রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে লুটপাটকারীদের একটি দল ভবনের নিচতলায় আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে গেটের সাটারে তালা ঝুলিয়ে চলে যান। ওই সময় অনেকে ভবনটির উপরের অংশে লুটপাটে ব্যস্ত ছিলেন। ভবনটিতে দাহ্য পদার্থ থাকায় দ্রুত ভবনের প্রতিটি তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। টানা পাঁচদিন পর দমকল বাহিনীর কর্মীরা এই আগুন নেভাতে সক্ষম হন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক আগুনের সূত্রপাত ও দায়িদের চিহ্নিত করতে ২৭ আগস্ট তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমানকে প্রধান করে ৮ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদনটি দাখিল করেছেন কমিটির প্রধান। প্রতিবেদনে এই ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা নয় ‘অগ্নিসংযোগ’ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও কারা এই কাজ করেছেন তাদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি।
কমিটি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, গণশুনানি আয়োজন এবং কারিগরী বিশেষজ্ঞদের মতামতের সমন্বয়ে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়েছে।