নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রির্পোটার ) : লাঞ্ছিত শিক্ষিকিা শাহিনুর পারভিন শানু’র বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের পর এবার ৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ৭ই মার্চ বুধবার বিকেলে ময়মনসিংহ বার কাউন্সিল থেকে অ্যাড. একেএম ফজলুল হক মোল্লা প্রেরিত একটি লিগ্যাল নোটিশ আসে নারায়ণগঞ্জের ওই শিক্ষকার কাছে।
নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ৩০ জুলাইয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ হাটুরিয়া এলাকার মৃত আকবর আলীর ছেলে মো. কাজলকে তিন মাসের মধ্যে দুবাই পাঠানোর কথা বলে ৬ লাখ টাকার চুক্তির মধ্যে ৪ লাখ টাকা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে শাহিনূর পারভিন শানু ও তাঁর পিতা সাইফুল ইসলাম গ্রহণ করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তাঁরা ওই ব্যক্তিকে বিদেশ না পাঠিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন। ফলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণসহ গ্রহণকৃত ৪ লাখ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। অন্যথায় আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এদিকে ময়মনসিংহ বার কাউন্সিল’র ৩ নং ভবন থেকে মো. কাজলের পক্ষে অ্যাড. একেএম ফজলুল হক মোল্লা প্রেরিত ওই নোটিসটি পেয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন নগরীর হাজীগঞ্জ এলাকার নির্যাতিতা স্কুল শিক্ষিকা ও তাঁর পরিবার। তাঁদের মতে, এই পরিবারটিকে নাস্তানাবুদ করার জন্য যা যা করার দরকার তার সবই করবেন প্রভাবশালী আইনজীবি জাপা নেতা আব্দুল মজিদ খোন্দকার। এই নোটিসটি এই মজিদই ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে প্রেরণ করেছেন বলেই তাঁরা ধারণা করছেন।
এ প্রসঙ্গে লাঞ্ছিতের শিকার শিক্ষিকা শাহিনূর পারভিন শানুর বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদেরকে হয়রানি করার জন্য প্রথমে মামলা করা হলো এবার এই উকিল নোটিস পাঠানো হলো। এর নেপথ্যে মজিদ খোন্দকারই রয়েছেন। এমন অবস্থা হলে আমাদের আত্মহত্যা করা ছাড়া আর উপায় থাকবে না।
লাঞ্ছিতের শিকার শিক্ষিকা শাহিনূর পারভিন শানু বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানির চেষ্টা করছে প্রভাবশালী নেতা মজিদ খোন্দকার। তাই নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে এবার ময়মনসিংহে মিথ্যাকে বাস্তবায়ন করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ তিনি আগেই বলেছিলেন আমরা দেওলিয়া পরিবার, অনেকেই আমাদের কাছে টাকা পায়। এখন তিনি চাচ্ছেন মিথ্যাকে বাস্তবায়ন করতে। যেহেতু তিনি আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে এমন মিথ্যা অভিযোগ এনে পরে তিনি গনমাধ্যমে বলেছেন, প্রতিবেশীকে টাকা দিতে স্ট্যাম্পের প্রয়োজন হয় না। এমন কিভাবে হতে পারে উনার সাথে তো আমার এরআগে কথাই হয়নি। একজন বিজ্ঞ আইনজীবী প্রভাবশালী নেতা কেউ চাইলেই টাকা দিয়ে দিবে! আর আমি এক যুগ ধরে স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে চাকুরিরত আছি।
পরিবারের দাবি, ময়মনসিংহ তাঁরা কখনো যায়নি এমনকি উকিল নোটিসে যে ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাকেও তাঁরা চেনেন না। এ ঘটনার পিছনে মজিদ খোন্দকারই জড়িত। ময়মনসিংহে তাঁর পরিচিত কোনো অ্যাডভোকেটের মাধ্যমে এই কাজটি করিয়েছেন। কেননা, নারায়ণগঞ্জ থেকে যদি এটি করা হতো তাহলে তিনি ধরা পরে যেতেন। তাই ময়মনসিংহ জেলাকে বেছে নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষিকা শাহিনূর পারভিন শানুকে অ্যাড. আব্দুল মজিদ খোন্দকার ও তাঁর স্ত্রী তাদের নাতনিকে বাড়িতে যেয়ে পড়ানোর কথা বলেন। এতে ওই শিক্ষিকা অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মজিদ দম্পতি। এক পর্যায়ে শিক্ষিকাকে শারীরিক লাঞ্ছনাসহ জুতা পেটাও করা হয়। এ ঘটনায় শিক্ষিকার পিতা সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে পুলিশ অ্যাড. মজিদকে গ্রেফতারও করে। পরে তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন।