নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (স্টাফ রিপোর্টার) : শহীদ মিনার মনে করিয়ে দেয় ত্যাগ আর অগণিত প্রাণের বিনিময়ে বাঙালির প্রাপ্তি। বিশ্বে বাঙালিই একমাত্র জাতি, যাদের ভাষার জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে। তাই শহীদদের স্বরণে দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি সারাবছর অবহেলায়-অরক্ষিত থাকলেও দিবসকে ঘিরে মিলে সাময়িক মর্যাদা। জনসাধারণের অসচেতনতায় এমনই চিত্র প্রতিবছর দেখে আসছে নারায়ণগঞ্জবাসী। কিন্তু বেদীকে স্থায়ীভাবে রক্ষায় এখনো কার্যকর হয়নি কোন পদক্ষেপ।
আগামীকালই শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া অবস্থিত এই শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে নামবে লাখো মানুষের ঢল। আর এজন্যই রবিবার ( ১৯ ফেব্রুয়ারী ) থেকে শেষ সময়ের প্রস্তুতী হিসেবে চলছে শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে ঘষামাজার কাজ। বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীও ঘিরে রাখছে চাষাড়া শহীদ মিনার চত্বর। সাধারণ মানুষের চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০-১২ জন লোক ব্যস্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে।
জানা গেছে, শহীদ বেদিসহ পুরো চত্বরেই অংকিত হবে রক্ত রঙের আঁচড়। পরিস্কারের জন্য শহীদ মিনারের চারিদিকের কিছু গাছের ডালও কাটা হয়েছে। তাদেরই একজন অসীম চন্দ্র দে তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিচনছন্ন পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্বে আছেন এবং এই কাজে সাথে দীর্ঘ ৩৪ বছর জড়িত।
অসীম চন্দ্র দে জানান, আমাদের কাজ শহীদ মিনার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। আমরা শহীদ মিনারে একটা পাতা পড়তে ও কোন রকম নোংরা হতে দেবো না। চাষাঢ়া শহীদ মিনারে ‘লাল সূর্য’ রং লাগানো হয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টাই চলবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। অধিকাংশ কাজই শেষ। বাকি রয়েছে কিছু টুকিটাকি কাজ ।
আরো জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ চারুকারু কলা ইন্সটিটিউটের ছাত্র/ছাত্রীদের সম্বন্বয়ে সোমাবার ২০ ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হবে আল্পনার কাজ। শহীদ মিনারে দেওয়া হয়েছে সাদা রঙও। ৯৫ শতাংশ কাজ এরই মধেই সম্পূর্ণ হয়েছে। এরপর মঞ্চ হলেই অন্যান্য আনুষ্ঠানিকা শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, ২১ ফেব্রুয়ারী এলেই শহীদ মিনার পাঙ্গনে ব্যপক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা দেখা গেলেও আগে ও পরে এর আশপাশ পরিণত হয় যেন ফুটপাতের দোকানীদের আশ্রমখানা। দিন কিংবা রাত চলে নানা রকম মানুষের আড্ডা। বেদীতে বসেই প্রকাশ্যে চলে ধুমপান। কেউ কেউ শহীদ মিনারের বেদীতে জুতা নিয়ে উঠতেও দিধাবোধ করেনা।
এ বিষয়ে নাসিক ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এর পক্ষ থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ করা রয়েছে। তারা প্রতিদিনই সকালে পরিচ্ছন্ন কাজ করে। মূল সমস্যা হচ্ছে সাধারণ মানুষ সচেতন না। তারা যে কোন খাবার খাচ্ছে, তা এখানেই ফেলে রেখে চলে যাচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত মানুষ সচেতন না হবে এই শহীদ মিনারকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব নয়।