নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কারাবন্দী দুই আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) সকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে, এ মামলায় দুই আসামির পক্ষে করা আপিল এবং খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের শুনানি শেষ করে সোমবার (২৯ অক্টোবর) বিকালে ওই দুই বিচারপতির বেঞ্চ আজ রায়ের দিন ধার্য করেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। বয়স, শারীরিক অবস্থা ও সামাজিক মর্যাদা বিবেচনায় নিয়ে আদালত ওই রায় দেন। সেই থেকেই তিনি কারাবন্দী রয়েছেন।
এ মামলায় তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। এর পর ১৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আপিল করেন। এ ছাড়া কারাবন্দী দুই আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদও আপিল করেন। এ মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া অপর্যাপ্ত হয়েছে উল্লেখ করে তা বাড়ানোর জন্য দুদক হাইকোর্টে আবেদন জানায়।
হাইকোর্ট এ মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন দিলে রাষ্ট্র ও দুদক তার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন জানায়। আপিল বিভাগ দুটি আবেদনের শুনানি শেষ করে গত ১৬ মে খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রাখেন। পাশাপাশি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চকে নির্দেশ দেন।
পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল নিষ্পত্তির সময়সীমা বাড়াতে আপিল বিভাগে একটি রিভিউ আবেদন জানায়। গত ৩১ জুলাই আপিল বিভাগ ওই রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল নিষ্পত্তির সময় তিন মাস বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর নির্ধারণ করেন। সর্বশেষ গত রোববার আবার আপিল নিষ্পত্তির সময়সীমা বাড়াতে আপিল বিভাগে আবেদন জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা যে আবেদন সোমবার সকালে খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এদিকে, ১২ জুলাই থেকে হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আপিলসহ এসব আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ কার্যদিবস শুনানি হয়েছে। এ অবস্থায় ২২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্টে এ মামলায় অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু হাইকোর্ট আবেদনটি নথিভুক্ত করে রাখেন। এই নথিভুক্ত করে রাখার আদেশের বিরুদ্ধে গত ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগে আবেদন জানায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এ আবেদনটিও সোমবার খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
দুটি আবেদন সকালে খারিজ হওয়ার পর আদেশের কপিটি দুদকের আইনজীবীরা দুপুরের পরপরই হাইকোর্টে দাখিল করেন। আপিল বিভাগের আদেশ দেখে হাইকোর্ট রায়ের দিন ধার্য করেন।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে রমনা থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা অনুদানের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়।