হাজার হাজার রিক্সা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কিভাবে চলে ?

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( প্রেস বিজ্ঞপ্তি ) : নারায়ণগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধাদের আবারো গর্জে উঠার সময় এসেছে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তিনি বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের যে পরিস্থিতি কে নারায়ণগঞ্জের দায়িত্ব নিয়েছেন তা আমি জানি না। কার কাছে নারায়ণগঞ্জের দায়িত্ব। আমি মুক্তিযোদ্ধাদের বলবো আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছি। এই নারায়ণগঞ্জকে স্বাধীন করার পেছনে আমাদের অবদান আছে। এভাবে নারায়ণগঞ্জ চলতে পারে না। এভাবে চলতে দেওয়া যেতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধাদের আরেকবার গর্জে উঠার সময় এসেছে। বার বার অনুরোধ অনুরোধ কে দায়িত্ব নিবে প্রশাসনের? জেলা প্রশাসক নাকি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র? ফুটপাত থেকে দোকানপাট উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, মানুষ যেন শান্তিতে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারে।  লাইসেন্স বিহীন হাজার হাজার রিক্সা একটি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কিভাবে চলে? আর মানুষকে কেন অশান্তি দেওয়া হয়। আর আমিই বা কেন এই এলাকার সংসদ সদস্য?

সোমবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সার্বিক সহযোগীতায়  বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট আয়োজিত আলোচনা, দোয়ায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হবে। যদি বুড়ো হয়ে যেয়ে থাকেন তাহলে এই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সকে স্কুল বানিয়ে দেন। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মেরা এখানে বসবে, এখানে আমরা বসে লাভ কি হবে? এখানে সারাদিন বসেন। নারায়ণগঞ্জের মানুষ কারা ভুল ত্রুটি করছে তাদের ভুল ত্রুটি ধরতে হবে। প্রয়োজনে আপনারা সাংবাদিক সম্মেলন করবেন কোথায় ভুল কোথায় অন্যায়, এই বৃদ্ধ বয়সে আমরা এটাই না জানি তাহলে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন কিভাবে করবেন, আর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার বাস্তবায়ন কি করে হবে?

তিনি বলেন, বিগত দিনে ২১টি বছর আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের মুখের মধ্যে স্কচস্টেপ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। জয় বাংলা বলতে পারি নাই। আজকে মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়েরা অন্তত এইটুকু নিশ্চয়তা রয়েছে যে অসুস্থ্য হলে ওষুধ কিনে খেতে পারবেন। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেটা করে দিয়েছেন। আজকে আমরা একটা জায়গায় বসার জায়গা পেয়েছি। একটা সময় আমরা রাস্তায় দাড়িয়েও কাজ করতে পারি নাই। যদি এই সুযোগই আমরা না পেলাম, যদি দোষ ত্রুটি আমরা উঠাতেই না পারলাম তাহলে কেনই এই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স কেন এতো আন্দোলন। আজকে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকীতে আপনাদের কাছে আমার কিছু চাওয়ার থাকতেই পারে। আগামী নির্বাচন কার নির্বাচন হবে। আবার কি রাজাকারের গাড়িতে পতাকা উড়ানো হবে? আবার কি আমাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে। মুখ খোলার সুযোগ পেয়েও যেন আমরা মুখ খুলছি না। আমি কারো বিরুদ্ধাচারন করতে চাচ্ছি না। যদি কোন জনপ্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা কামনা করেন তাহলে তারা সহযোগীতা করবে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সহযোগীতা চাইবেন না আবার সহজ ভাবে চলাফেরা করতে দিবেন না এটা তো হতে পারে না। এভাবে চলতে পারে না।

জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের কাজের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি আবারো আপনাদের কাছে অনুরোধ রাখছি, আমি একজন সংসদ সদস্য হয়েও শহরের কোন কাজ আমি করতে পারবো না। মসজিদ, মন্দির, স্কুল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এগুলো ছাড়া সংসদ সদস্যের শহরে কোন কাজ নাই। শহরকে সুন্দর করার জন্য আমরা পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশন করেছি। সিটি কর্পোরেশন যদি আমাদের সহযোগীতা চায় তাহলে ইনশাল্লাহ আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সহযোগীতা করে নারায়ণগঞ্জ সম্পূর্ন যানজট মুক্ত রাখবো, নারায়ণগঞ্জের মানুষ শান্তিতে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারবে। সকল মুক্তিযোদ্ধাদের মাধ্যমে আমি সিটি মেয়রের কাছে আহবান রাখলাম আপনি দলগতভাবে আলোচনায় বসেন, অন্যথায় যদি আপনি যদি সাধারণ মানুষের সহযোগীতা চান, মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা চান তাহলে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা বীরেরা আপনাকে সর্বপ্রকার সহযোগীতা করতে প্রস্তুত। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা মানুষের কল্যানে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হলেও এখনো যে কোন কাজ করতে প্রস্তুত আছি।

সবশেষে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব দিলাম উনি যদি মানেন তাহলে আমি কথা দিচ্ছি যারা নারায়ণগঞ্জে নেতৃত্বে দিতে আসবেন আমরা তাদের সবাইকে সহযোগীতা করতে প্রস্তুত আছি। আমাদের কাছে কোন দল বড় নয় শুধু একটাই চাহিদা যেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার আবারো ক্ষমতায় আসতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি যদি আরো একবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করতে পারে। আমরা হয়তো তখন সেখানে থাকবো না আমরা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মকে নিয়ে কাজ করছি। আগামীতে হয়তো তারাই দেশ চালাবে তারাই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করবে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিটের কমান্ডার মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, সদর উপজেলা কমান্ডার শাহজাহান ভুইয়া জুলহাস, বন্দর উপজেলা কমান্ডার আব্দুল লতিফ সহ সাবেক কমান্ডার সামিউল্লাহ মিলন, কমান্ডার আমিনুর রহমান, মোহর আলী চৌধুরী সহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩শত মুক্তিযোদ্ধা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এমপি সেলিম ওসমানের উদ্যোগ ও নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জে প্রথমবারের মত বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্মলিত টিশার্ট ও টুপি পড়ে ১০ হাজার মানুষ শহরে শোক র‌্যালী করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেন করে। তারপর থেকে প্রতি বছর সেলিম ওসামনের উদ্যোগে তাঁর নির্বাচনী এলাকার আওতাধীন প্রতিটি মহল্লায় বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন হয়ে আসছে। এছাড়াও তাঁর উদ্যোগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের নিয়ে ১৭মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন বর্ণাঢ্য ভাবে উদযাপন হয়ে আসছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত