নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সোনারগাঁ প্রতিনিধি ) : সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জমি দখল, জুয়ার আসর বসানো, মাদক ব্যবসা পরিচালনা, অবৈধ বালুকাটা ও বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ড পরিচালনায় ওই এলাকার কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে উল্লেখ করে অপরাধ মুলক কর্মকান্ডে যারাই সম্পৃক্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম (পিপিএমবার)। রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে সোনারগাঁ থানায় মুজিব বর্ষের অঙ্গিকার, পুলিশ হবে জনতার এ স্লোগানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার এ নির্দেশ দেন। এ ঘোষনার পর বারদী ইউনিয়নের নিরীহ জনসাধারনের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বারদী ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়াকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলায় সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া ডাকাত সর্দার ও ১০ মামলার আসামী হাবিবুর রহমান হাবু ওরফে ডাকাত হাবুর পক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় সাফাই গাইতে গিয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম (পিপিএমবার) এর কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য নজরুল ইসলাম মেম্বার। এসময় পুলিশ সুপার ওই ইউপি সদস্য ও বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হকের কঠোর সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, বারদীর শান্তিরবাজার এলাকার হাবুর ব্যাপারে সুপারিশ গাইতে আমার কাছে বারদী ইউপির চেয়ারম্যান জহিরুল হক ও কয়েকজন চেয়ারম্যান উপস্থিত হয়েছিলেন। আমি স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি হাবুর বিরুদ্ধে এলাকায় অনেক অভিযোগ রয়েছে। তারমত লোকের ব্যাপারে আপনাদের সুপারিশ নিয়ে আসা ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, বারদী ইউপির শান্তিরবাজার এলাকায় ফারুক নামের আরেক ইউপি সদস্যকে কয়েকদিন আগে মারধর করা হয়েছে। এই ঘটনার মামলা কেন আড়াইহাজার থানায় নেওয়া হয়েছে। এই মামলা তো সোনারগাঁ থানায় নেওয়া উচিত ছিল। মানুষ যদি জনপ্রতিনিধিদের মারধর করে তাহলে বুঝতে হবে ওই এলাকায় জনপ্রতিনিধিরা কতটুকু ভালো। নিশ্চয়ই ওই এলাকায় জনপ্রতিনিধিরা এমন কোন অপকর্ম করেছে যার কারণে তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের কোন আস্থা নেই। মানুষের মনে তাদের বিরুদ্ধে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এসময় সোনারগাঁ থানার ওসির উদ্দেশ্যে পুলিশ সুপার বলেন, যারা বারদী ইউনিয়নে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত হচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। যখনই কোন আইন বিরোধী ঘটনা ঘটবে তখনই তাৎক্ষনিক জড়িতদের গ্রেফতার করে থানা হাজতে ঢুকাতে হবে। হোক সে চেয়ারম্যান, হোক সে মেম্বার, জনপ্রতিনিধি বা অন্যকোন ক্ষমতাসীন ব্যক্তি। যদি গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে না পারেন তাহলে সোনারগাঁ ছেড়ে অন্য কোন থানায় বদলি হয়ে চলে যান। পুলিশ সুপার বলেন, জনগনের যানমাল নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশের। জনগন কষ্টে থাকবে আর পুলিশ থানায় বসে আঙুল চুষবে- এটা হতে পারেনা।
সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টিএম মোশাররফ হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) মোঃ খোরশেদ আলম।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সোনারগাঁ থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সোনারগাঁ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনি, সোনারগাঁ থানার ওসি অপারেশন রুবেল হাওলাদার, কাঁচপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর, সোনারগাঁ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন কুষার, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী নাসরিন সুলতানা ঝরা, সাংবাদিক পনির ভূঁইয়া, গাজী মোবারক, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নুরু, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম প্রমূখ।