রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রতিবাদে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে নির্মম ভাবে নিধন, নির্যাতন ও ভিটা মাটি থেকে বিতারণের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনটি মানববন্ধন শেষে এক বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে। আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব নূর উদ্দিন আহম্মেদর সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, সুভাস সাহা, মনির হোসেন, সেলিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন মন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক রমজানুল রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদব মাকিব মুস্তাকিম শিপলু, ক্রীড়া সম্পাদক আজমত উল্লাহ, মহিলা নেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, আঞ্জুমান আরা আকসির প্রমুখ।

সভায় সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, চীন, ভারত ও রাশিয়ার ভূমিকার সমালোচনা করে রোহিঙ্গাদের স্বার্থে ঐ দেশের সরকার সমূহকে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় এবং মিয়ানমার থেকে চাল সহ সকল প্রকার দ্রব্য আমদানী বর্জন করার আহ্বান জানান। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর মহিলা শাখার আহ্বায়িকা বেগম আঞ্জুমান আরা আকসির রোহিঙ্গা নারী দর্শন, নির্যাতন ও শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা জানান। সভায় সাধারণ সম্পাদক জনাব নাসির উদ্দিন মন্টু বলেন যে বাঙ্গালী জাতির ন্যায় রোহিঙ্গারাও একটি জাতি, তাদের জাতি সত্তার আত্মনিয়ন্ত্রন করার অধিকার রয়েছে, বাঙ্গালিরা যেমনি মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন বাংলাদেশ কায়েম করেছে, তেমনি রোহিঙ্গা জাতিও তাদের আরকান রাজ্য কায়েমের অধিকার রাখে, আমরা তাদের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাই।

তিনি তার বক্তব্যে রোহিঙ্গা স্বরনার্থীদের বাংলাদেশের অবস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানান এবং কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। তিনি দলমত নির্বিশেষে সকলকে দুর্দশাগ্রস্থ রোহিঙ্গাদের সাহাযার্থে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

আলহাজ্ব নূর উদ্দিন আহম্মেদ তার সভাপতি বক্তব্যে বলেন, ঐতিহ্যবাহী স্বাধীন আরাকান রাজ্য, যা বর্তমানে মিয়ানমারে দখলীভূক্ত হয়ে রাখাইন রাজ্যে পরিনত হয়েছে, যেখানে রোহিঙ্গা জাতি গোষ্ঠী বংশ পরম্পরায় শত শত বৎসর যাবৎ নিজ বাস ভূমিতে বসবাস করে আসছে। বিগত ১৯৬২ সালে নে উইন ক্ষমতা দখলের পর রোহিঙ্গাদের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে। ১৯৭০ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব সনদ প্রদান বন্ধ করে দেয়। ১৯৭৪ সাল থেকে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এমতাবস্থায় ১৯৭৮ সালে রোহিঙ্গাদের উপর জুলুম নির্যাতন করে তাদের ভিটামাটি থেকে বিতাড়ন শুরু করে। বর্তমানে ১৯৮৪, ১৯৮৫, ১৯৯০ এবং ২০১২ সালে আগত প্রায় ৫ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তদুপরি মরার উপর খারার ঘা বর্তমানে ২০১৬ ডিসেম্বর মাসে এবং ২০১৭ এর ২৫ আগষ্ট থেকে আরও প্রায় ৫ লক্ষ রোহিঙ্গা কে তাদের বাড়িঘর জ¦ালিয়ে দিয়ে হত্যা নির্যাতন করে বাংলাদেশে বিতাড়ন করেছেন। এমনকি আরও ৫ লক্ষ নির্যাতিত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা কফি আনান প্রদত্ত তদন্ত কমিশনের পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই এবং রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দিয়ে তাদের নিজ বাসভূমি রাখাইন রাজ্যে পুনরায় প্রত্যাবর্তনের দাবী সহ জাতিসংঘ শান্তি রক্ষী বাহিনী মোতায়নের দাবী জানাই।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দৈনিক বিষের বাঁশির সম্পাদক সুভাষ সাহা, হাজী মোঃ সামসুল আলম, হাজী আহম্মদ আলী বেপারী, শ্রমিক নেতা মাহামুদ হোসেন, রমজানুল রশিদ, রেড ক্রিসেন্ট সম্পাদক আঃ রহমান লিটন, মোঃ মনির হোসেন, মোঃ হোসেন কাজল, মঈন আহসান, দিলারা মাসুদ ময়না, আজমত উল্লাহ্ খন্দকার, হাজী মোঃ সেলিম হোসেন, মাকিদ মুস্তাকিম শিপলু, আঃ সাত্তার ভুট্টু, হাজী মোঃ রুহুল আমিন, আবুল সরদার, ইসমাইল করিম, তোফাজ্জল হোসেন, খাজা আহম্মদ, নাজমুল হাসান নান্নু, শফিকুল ইসলাম খান, রাজিউদ্দিন ও প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

add-content

আরও খবর

পঠিত