রূপগঞ্জে স্যানেটারী ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে দুর্নিতীর অভিযোগ, মাসিক আয় ৫০ লাখ টাকা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পাইকারী ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার থেকে ভেজাল  খাদ্য, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, লাইসেন্স নবায়ন, নতুন লাইন্সেস প্রদানের নামে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরকারী রুলের অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এসব অর্থ আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী একটি মুদি দোকানীর কাছ থেকে লাইন্সেস নবায়ন ফি বার্ষিক ৩ শত টাকা আদায় করার কথা থাকলেও নেয়া হচ্ছে ১২ শত থেকে ১৫ শত টাকা।

বড় ও মাঝারী ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে লাইন্সেস নবায়ন অথবা নতুন লাইন্সেস ফি ২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। এ ছাড়াও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, ভেজাল খাদ্য অযু হাতে জরিমানা করছে অনেক টাকা। তার দাবীকৃত টাকা দিতে কোন ব্যবসায়ী অপারগতা করলে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে। আবার কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলার মুড়াপাড়া, রূপগঞ্জ সদর, ভোলাব, ভুলতা, বেলদী, ইছাখালী, দাউদপুর, জাঙ্গীর, নগরপাড়া, নাওড়া, পূর্বগ্রাম, চনপাড়া ,হিরনাল, ইছাপুরা, ডহরগাও, চারিতালু, হোড়গাও, বালিয়াপাড়া, মাহনা, গোলাকান্দাইল, কর্ণগোপ, হাটাবো, আতালাপুর, কাঞ্চন, সাওঘাট, ভক্তবাড়ি, বাগবের, কালনী, ভোলানাথপুর, গুতিয়াব বাজারসহ পাড়া মহল্লায় প্রায় ৫০ হাজারের মত ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে লাইসেন্স নবায়ন, নতুন লাইন্সেস প্রদান, ভেজাল খাদ্য পরীক্ষা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার অজু হাতে ১২ শত থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবেই মনিরুল ইসলাম প্রতি মাসে ৫০ লাখ টাকা আয় করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

রূপগঞ্জের মাঝিনা নদীরপাড় এলাকার মেসার্স তৈয়াবুর জেনারেল ষ্টোরের মালিক তৈয়াবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, গত ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের তিনি ৫০০ শত টাকা দিয়ে প্রিমিসেস লাইসেন্স নবায়ন করেছেন। কিন্তু গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে মনিরুল ইসলাম সেই প্রিমিসেস লাইন্সেস নবায়ন করতে ২ হাজার ৫০০ শত টাকা চাচ্ছে। তিনি এত টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে মোবাইল কোট বসিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে ভয় দেখানো হচ্ছে। মুড়াপাড়া বাজারের মোস্তফা ষ্টোরের মালিক মোস্তফা মিয়া বলেন, আমার একটি ছোট মুদি দোকান। আমার কাছ থেকে লাইসেন্স নবায়ন ফি ১২ শত টাকা নিয়েছে। কিন্তু আমাকে টাকার কোন রশিদ প্রদান করেনি।  মুড়াপাড়া বাজারের মমিন ষ্টোরের মালিক মমিন মিয়া বলেন, মনিরুল ইসলাম তার কাছ থেকে নতুন লাইসেন্স বাবদ ২ হাজার ৫০০ শত টাকা নিয়েছে। এটা না কি সরকারীর নিয়ম। এ ধরনের অভিযোগের শেষ নেই।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মনিরুল ইসলাম সরকারী রুল অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন ২০ হাজার ২৫০ টাকা। অথচ তিনি ঢাকার এয়ারর্পোট এলাকায় নিকুঞ্জ টাওয়ারে ২০ হাজার টাকা মাসিক ফ্লাট ভাড়া দিয়ে বসবাস করছেন। ছেলে-মেয়েদের ঢাকার নামী-দামী স্কুলে লেখা পড়া করাচ্ছেন। দেশের বাড়িতে প্রচুর সম্পদের মালিক বনে গেছেন।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে কথা হয় মনিরুল ইসলামের সঙ্গে, তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ  মিথ্যা বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, একটি কুচক্রি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে কয়েক মাস হয় যোগদান করেছি। যেহেতু এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে, বিষয়গুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

add-content

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

পঠিত