রাত পোহালেই ফেরিতে গাড়ি ও যাত্রী পরিবহন বন্ধ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : আগামীকাল ২৩ই জুলাই শুক্রবার  সকাল থেকে ৫ই আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ফেরিতে যাত্রীবাহী সব ধরনের যানবাহন যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেবল জরুরি পণ্যবাহী যান অ্যাম্বুলেন্স পারাপার করা হবে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম খান তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিসি গত ৯ই জুলাই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ২৩ই জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে।

করোনাজনিত রোগ সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১৩ জুলাইয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ জুলাই সকাল ছয়টা থেকে আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নৌপথে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান (লঞ্চ/স্পিডবোট/ট্রলার/অন্যান্য) চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিআইডব্লিউটিএ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী নৌযানের মালিক, মাস্টার, ড্রাইভার, স্টাফ, যাত্রী সাধারণ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ করা হয়েছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছে তারা।

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে ২৩টি শর্ত দিয়ে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। বিধিনিষেধে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ সব ধরনের দোকানপাট, গণপরিবহন এবং শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে। তবে কোরবানির পশুর চামড়া সংশ্লিষ্ট খাত, খাদ্যপণ্য এবং কোভিড১৯ প্রতিরোধে পণ্য ওষুধ উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান বিধিনিষেধের বাইরে থাকবে।

এর পাশাপাশি সীমিত পরিসরে চলবে ব্যাংকিং কার্যক্রমও। সেই সঙ্গে খোলা থাকবে বীমা কোম্পানির কার্যালয় শেয়ারবাজার। ব্যাংক লেনদেনের সঙ্গে সমন্বয় করে শেয়ারবাজারে লেনদেন হবে সীমিত। বীমা কোম্পানিও খোলা থাকবে সীমিত পরিসরে।

যে ২৩ শর্তে কঠোর বিধিনিষেধ

. সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।

. সড়ক, রেল নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) সব প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

. শপিংমল/মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে।

. সব পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

. সব প্রকার শিল্পকলকারখানা বন্ধ থাকবে।

. জনসমাবেশ হয় ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ধর্মীয় আচারঅনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

. ব্যাংকিং/বীমা/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

. সরকারি কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন এবং দাফতরিক কাজ ভার্চুয়ালি (নথি, টেন্ডারিং, মেইল, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপসহ অন্যান্য মাধ্যম) সম্পন্ন করবেন।

১০. আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমনকৃষি পণ্য উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি), খাদ্যশস্য খাদ্যদ্রব্য পরিবহন/বিক্রয়, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড১৯ টিকা প্রদান, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ইন্টারনেট (সরকারিবেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা (পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা, সড়কের বাতি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রম), সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ফার্মেসি ফার্মাসিউটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারি যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।

১১. বিভাগীয়, জেলা উপজেলা পর্যায়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা রাখার বিষয়ে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

১২. জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক/লরি/কাভার্ড ভ্যান/নৌযান/পণ্যবাহী রেল/ফেরি নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।

২৩. বন্দরসমূহ (বিমান, সমুদ্র, নৌ স্থল) এবং সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।

১৪. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়বিক্রয় করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন, বাজার কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

১৫. অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

১৬. টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।

১৭. খাবারের দোকান, হোটেলরেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে।

১৮. আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট/প্রমাণক প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারবেন।

১৯. স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

২০. আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

২১. জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি/কোস্টগার্ড, পুলিশ, র‌্যা আনসার নিয়োগ টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি সময় নির্ধারণ করবেন। সেই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

২২. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

২৩. সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর আওতায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন।

সুত্র : জাগো নিউজ।

add-content

আরও খবর

পঠিত