নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪: বন্দর উপজেলা পরিষদের নতুন বহুতল কমপ্লেক্স ও হল রুম নির্মাণ কাজের ভিত্তির প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ২৮ ডিসেম্বর সকালে উপজেলা পরিষদে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান উক্ত নির্মাণের কাজের উদ্বোধন করেন নির্মা কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় তিনি আগামী এক বছরের মধ্যেই নতুন বহুতল কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ এবং আগামী ২ মাসের মধ্যেই ৪ হাজার স্কয়ার ফিটের হল রুমের নির্মাণ সম্পন্ন করা হবে আশা প্রকাশ করেছেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, সরকার উপজেলায় একটি সালিশী কেন্দ্র দিয়েছেন। আশা করছি আগামী ২ মাসের মধ্যে হলরুমটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। তখন আপনাদের বিভিন্ন বিচার সালিশ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যেমে একদিনেই সম্পন্ন হয়ে যাবে। এছাড়াও হলরুমটি সম্পন্ন হলে আমি বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বার নিয়ে সপ্তাহে অন্তত একবার বসে আলোচনা করতে পারবো।
এ সময় তিনি ব্যক্তিগত অর্থায়নে বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের নির্মিত ৫ স্কুলের মধ্য থেকে ২টি স্কুলকে কৃষি বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার ঘোষণা দিয়ে বলেন, আপনাদের অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনার আপনাদের জমি বিক্রি করে দিবেন না। আপনাদের জমিটি অনাবাদী ফেলে রাখবেন না। যার যতটুকু জমি রয়েছে ততটুকু জমিতেই যেটাই পারেন চাষ করবেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে আপনাদের প্রশিক্ষন প্রদান করা হবে। আপনাদের সহযোগীতায় যে ৫টি স্কুল বানানো হয়েছে তার মধ্য থেকে ২টি স্কুলকে আমি কৃষি বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করবো। যেখানে আপনাদেরকে কৃষি কাজের উপর প্রশিক্ষন দেওয়া হবে। আমি সাধারণ মানুষের জন্য পকেট থেকে যে টাকা খরচ করছি তা কিন্তু আমার গার্মেন্টস থেকে অর্জিত টাকা না। সেগুলো সম্পূর্নই আমার কৃষি থেকে উপার্জিত অর্থ। আমি প্রতি সকালে আড়াই লাখ টাকার দুধ বিক্রি করি। খুলনা আমার যে কৃষি ফার্ম রয়েছে সেখানে ধান থেকে শুরু করে সকল প্রকার সবজি, ফল, মাছ, গরু, ছাগল, ভেড়া, পালন করে থাকি। এমনকি সেখানে কুকুরও পালন করা হয়। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনাদের এক ইঞ্চি জমিও আপনারা ফেলে রাখবেন না। আমি আপনাদের স্বপ্ন দেখাতে পারবো কিন্তু বাস্তবায়ন আপনাদেরকেই করতে হবে।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির অনুমোদন নিয়ে উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষন করে তিনি বলেন, আপনারা স্কুল পরিচালনা কমিটিতে এমন কোন লোক দিবেন না যারা অশিক্ষিত। যারা কোনদিন স্কুলে যায়নি তারা স্কুল পরিচালনা কমিটিতে মাতব্বরী করবে এটা হতে পারে না। শিক্ষিত এবং যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদেরই যেন স্কুল পরিচালনা কমিটিতে রাখা হয়।
নিজ দল জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সম্পর্কে বলেন, অনেক দলের লোকেরা বলে থাকেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাই সব কিছু করছে। কিন্তু আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই। এই আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। দীর্ঘদিন যাবত এখানে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য। স্বাভাবিক ভাবে যে দলের এমপি থাকে সেখানে সেই দলের নেতাকর্মীদের প্রভাব একটু বেশি থাকে। কিন্তু এখানে সম্পূর্ন ভিন্ন জাতীয় পার্টির কোন নেতাকর্মী এখানে কোনদিন টিআর কাবিলায় হাত দিয়েছে, কোন টেন্ডারবাজি করেছে কেউ দেখাতে পারবেন না। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা সব সময় উন্নয়নে কাজ করে থাকে। নেতাকর্মীরা নি:স্বার্থ ভাবে সহযোগীতা করেছে বলেই আজকে আমি উন্নয়ন কাজ গুলো করতে পেরেছি। অদূর ভবিষ্যতেও তারা আমাকে একইভাবে সহযোগীতা করবে। তাই আমি জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞ।
সব শেষে তিনি বলেন, আপনারা বন্দরের মানুষ আমার ভাই নাসিম ওসমানকে এতোটা ভালবাসতেন এটা আমার জানা ছিল না। যদি জানতে পারতাম তাহলে নাসিম ওসমানকে এই বন্দরের মাটিতে কবর দিতাম। আমি যখন জানতে পেরেছি আপনারা বন্দরের মানুষ আমাদের কতটা ভালবাসেন তখন আমি ঘোষণা দিয়েছি আমার মৃত্যুর পর যেন লাশটি এই বন্দরের মাটিতেই দাফন করা হয়। আমি মৃত্যুর পরেও আপনাদের মাঝে থাকতে চাই।
বন্দর উপজেলার নির্বার্হী কর্মকর্তা(ইউএনও) পিন্টু বেপারীর সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম, জেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন রুপু, মহানগর ছাত্র সমাজের সভাপতি সবুজ, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহম্মেদ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।