নারায়নগঞ্জ বার্তা ২৪ : বন্দরের ঐতিহ্যবাহী বিএম ইউনিয়ন স্কুল এন্ড কলেজের কাছে জমি বিক্রির নামে স্কুলের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আমীরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। অভিযোগে জানা গেছে, বন্দর ২২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে বি এম স্কুলের কাছে বিক্রিকৃত ২২.৭১ শতাংশ জমির পুরোটাই ভূয়া। অর্থাৎ ভূয়া দলিলের মাধ্যমে মালিকানা জাহির করে স্কুলের কাছে জমি বিক্রি করে আমীরুল হাতিয়ে নিয়েছে কোটি টাকা। সম্প্রতি ভূমি অফিস এবং বন্দর থানা পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, বিএম ইনিয়ন স্কুল এন্ড কলেজ, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ এর পরিসর বৃদ্ধির লক্ষ্যে গঙ্গাকুল বন্দর ‘ম’ খন্ড মৌজার বিভিন্ন দাগের মালিকানা দাবিদার মোঃ আমীরুল ইসলাম গং থেকে ২০০৫ সালে হাফেজ সাহাবুদ্দিন আহমেদ সহ- সভাপতি থাকাকালে ৩টি দলিলে মোট ১৪.৪৬ শতাংশ এবং গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী সভাপতি থাকাকালে ৮.২৫ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়। ক্রয়কৃত এসব জমি নামজারী করার জন্য মূল কাগজপত্র চাওয়া হলে বিক্রেতা আমিরুল কোর্টে ভিপি মামলার কারনে কাগজপত্র আদালতে আছে বলে জানায়। পরে একটি হুকুমনামা দলিল সর্বরাহ করে। ইতিপূর্বে ঐ হুকুমনামা দলিলবলে আমিরুল গং ভূমি অফিসে ৫টি নামজারী করেছিলো। পরে বিএম স্কুলের নামে নামজারী করতে কাগজপত্র ভূমি অফিসে জমা দিলে আমীরুল ইসলামের বাবা সিরাজুল ইসলামের নামের দলিল (নং-১৭৬৮) জাল এবং ভূয়া বলে প্রমাণিত হয়। ফলে বন্দর সহকারী কমিশনার (ভূমি) পূর্বের ৫টি নামজারী বাতিল করে দেয়। এতে আমিরুল গংদের মালিকানা ভূয়া প্রমাণিত হয়। শুধু স্কুল নয় বিভিন্নজনের কাছে ঐ জমি বিক্রি করে বিপুল অংকের টাকা আত্মসাত করেছে আমিরুল। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে বন্দর ভূমি অফিসের তৎকালীন তহসীলদার আনোয়ার হোসেন জানান, আমীরুল যে দলিল বলে সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেছে ঐ দলিলটি জাল। আমি নিজে তদন্ত করে জাল দলিল উপস্থাপনের বিষযটি তদন্ত রিপোর্ট আকারে পেশ করলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঐ দলিলবলে করা ৫টি নামজারী বাতিল করে দেন। বিএম ইউনিয়ন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আঃ সাত্তার মিয়া বলেন, যে দলিলবলে স্কুল জমি ক্রয় করেছে সেটি ভূমি অফিস জাল বলে অখ্যায়িত করায় পুর্বের নামজারী বাতিল করে দিয়েছে। এখন পরবর্তি কার্যক্রম নিয়ে বর্তমান গভর্নিং বডি কাজ করছে। এব্যাপারে জানতে বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি আবুল জাহের চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোনে ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি। গত ১৫ ডিসেম্বর জাল দলিলে বিক্রিত জমি কিনে প্রতারিত কয়েকজন স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানালে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নজরুল ইসলামকে নির্দেশ দেন। এরপর সংশ্লিষ্ট পক্ষদের নিয়ে দুদফা বৈঠক হয়েছে বলে বন্দর থানা সূত্র জানিয়েছে। এদিকে ঘটনায় অভিযুক্ত বন্দর ২২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ৬৪ বছর ধরে জমিটি ভোগদখল করে আসছি। স্কুলের কাছে জমি বিক্রি করে টাকা গ্রহনের বিষয়টিও তিনি স্বীকার করেন। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।