নারায়ণগঞ্জে হা করা গর্ত, সড়ক ও জনপথ দেখে না !

নারায়ণগঞ্জ র্বাতা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নগরীর অক্ট্রো অফিস এলাকার সামনে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা যাওয়ার পুরাতন সড়কের মাঝে বিশাল গর্ত। এমন ব্যস্ত সড়কে কয়েক সপ্তাহ ধরে হা করে থাকা এতো বড় আকারের গর্ত থাকলেও চোখে পড়েনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বিভিন্ন সময়ই এ গর্ত থাকার কারণে যানবাহনের চাপে লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ যানজট। এছাড়াও রাতের আধারে সড়কটিতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকাতেও স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ রয়েছে। আর ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীসহ সাধারণ পথচারীদেরকেও।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে যানজটে আটকে থাকা রিকশাযাত্রী নিঝুম বললেন, এ রকম ব্যস্ত রাস্তা একটা গর্ত এত দিন ধরে কীভাবে থাকে! দুইটা রিকশাও তো পাশাপাশি চলার উপায় নেই। এটার জন্য যানবাহন চলাচল করতেও ঝামেলায় পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অক্টো অফিস এলাকায় সামনের সড়কের অনেক জায়গা নিয়ে এ গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। যা দিন দিন বাকি সড়কের ঢালাই ভেঙ্গে আরো বড় হচ্ছে। কিছু দূর গেলেই রয়েছে সরকারী গভমেন্ট গার্লস স্কুল। যেহেতু এসএসসি পরীক্ষার্থীদের আসা যাওয়া রয়েছে। সেক্ষেত্রে তারা যাতায়াতকালে নানা অসুবিধার সম্মূখীন হচ্ছে।

গর্তগুলোর বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, এ গর্ত ঠেকাতে কিছু ইট ভাঙ্গা ফেলে গেছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে তা সরে গিয়ে আবার গর্ত বের হবে। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।

এদিকে এমন বেহাল অবস্থার অবসান চেয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ তার ব্যক্তি ফেসবুক আইডিতে ছবিসহ পোস্ট দিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
যেখানে লিখা রয়েছে-সড়ক ও জনপথ বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি—

নারায়নগঞ্জ- ঢাকা পুরাতন সড়কের অক্ট্রো অফিস এলাকায় রাস্তার মাঝে বিশাল গর্তের কারনে অহরহ যানজট এবং সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও আদর্শ স্কুলে চলমান এসএসসি পরীক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। আজকের ইটের খোয়া ও ভরাট বালু দিয়ে অস্থায়ী সমাধান করা হয়েছে, যা কোন কাজে আসছে না। দয়া করে স্থায়ী সমাধান চাই।

অপরদিকে রাতের বেলায় এই মূল সড়কটির অধিকাংশই অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। কিছু কিছু স্থানে নিভু নিভু বাতির আলো জ্বললেও প্রায় অর্ধমৃত। এ সড়কের অনেকাংশে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় রাতের বেলায় যানবাহনের আলোয় চলছে পথচারীরা। দুই বা একজনকে হাতে মোবাইলের আলো জ্বেলেও হাঁটতে দেখা যায়। তবে বাতিহীন সড়কের ব্যাপারে ভ্রুক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের।

আরো জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের পাশে মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য আধুনিক ডিজাইনে শেষ কৃত্য স্থানটিকে প্রস্তুত করা হলেও নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। এতে করে বিভিন্ন সময়ই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। কখনও ঘটছে মোটর সাইকেলে দুর্ঘটনা, কখনও ব্যাটারী চালিত রিক্সা কখনও প্রাইভেট কার কিংবা ট্রাক খাদে পড়ে থাকার ঘটনাও হয়েছিল।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, কিছু অংশ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, কিছু অংশ ইউনিয়ন আবার সড়ক ও জনপথের। এ দ্বিধা দ্বন্দ্বে এ সড়কের বাতি নিয়েও তেমন একটা ভ্রুক্ষেপ করেন না কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া মূল সড়ক এবং শিল্প কারখানা বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় সন্ধ্যার পর দোকানপাট বন্ধ হতে শুরু করে। ফলে চারপাশ নীরব থাকায় এ পথে যাতায়াতকারী শ্রমিক ও নানা পেশাজীবী মানুষ চলাচলকালে আতংকিত থাকতে হয়।
ভুক্তভোগী একাধিক বাসিন্দা বলেন, অন্ধকারে ছিনতাইয়ের শঙ্কায় থাকতে হয়। এছাড়া হাঁটার সময় একটু অসাবধান হলে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে। কিছু কিছু স্থান অন্ধকার থাকায় মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের আনাগোনাও বেড়েছে।

এ নিয়ে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, এলাকাটি আমার ওয়ার্ডের আওতাধীন। তবে মূল সড়কটি পড়েছে জেলা সড়ক ও জনপথের আওতায়। তাই বিষয়টি সমাধানে তাদরে দৃষ্টি আকর্ষণ জরুরী।

এ বিষয়ে জানতে জেলা সড়ক ও জনপথের ওয়েভ সাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ হাসান আল মামুন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, নারায়ণগঞ্জ সওজ উপবিভাগ-২ সামিউল কাদের খানসহ সহকারী প্রকৌশলী মু: তারিক হোসেন এর মুঠোফোনে কল দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

পরে নির্বাহী প্রকৌশলী (সওজ) শাহানা ফেরদৌসের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি মাত্র কয়দিন হলো দায়িত্ব পেয়েছি। তাই এখনো সকল দপ্তরের বিষয়ে অবগত হতে পারিনি। তবে সড়কের গর্ত থাকার বিষয়টি নোট রাখলাম। আমি চেষ্টা করবো দ্রুত এর সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহন করা যায় নাকি।

add-content

আরও খবর

পঠিত