ডিবির জালে ধরা পড়ল ৬ প্রতারক, টাকা দ্বিগুনের জাদুর বাক্স !

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : টাকাকে দ্বিগুন বানানোর কথা বলে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতকারী প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এসময় তাদের সাথে ২৬ হাজার ডলার, ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত কাচের তৈরী বাক্স সহ পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজবাহউদ্দিন খান শাফি চেয়ারম্যান (৬০), তাঁর ছেলে আমিরুল খান (৩০), চাঁদপুরের মতলব এলাকার মফিজুল ইসলাম শান্ত (৩১), এমদাদুল হক আকন্দ (৪৫), কামরুজ্জামান আকন্দ (৪০) ও কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর এলাকার মজিবুর খান (৫৪)। এই ৬জনকে গত তিনদিনের অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ৮ই সেপ্টেম্বর জেলা গোয়েন্দা শাখা নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে গ্রেফতারকৃত ৬জনকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হয়।

জানা গেছে, গত ২৯ই জুলাই নারায়ণগঞ্জের অভিযাত রেস্টুরেন্ট গ্র্যান্ডহল  ও ঢাকা বারিধারায় সুপ্তি সুয়েটার কোম্পানী এর মালিক জনাব মোস্তাফিজুর রহমান মামুন এর নিকট হইতে টাকা ডাবল বানানোর প্রতারণা করে ২ কোটি ১ লক্ষ ৫০ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রতারণা করে নিয়ে যায় এক প্রতারণা চক্র। পরে এঘটনায় সদর মডেল থানায় একটি মামলা রুজু হয়, যার নং-০১ তাং-০৫/০৯/২০১৭ ইং, ধারা-৪০৬/৪২০ দন্ড বিধি।

অগ্রগতির লক্ষে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ সুপার জনাব মঈনুল হক ( পিপিএম ) এর নির্দেশ মোতাবেক জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ জনাব মাহাবুবুর রহমান এর তত্বাবধানে এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম, এসআই মনিরুজ্জামান, এসআই আরিফুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ ৫টি থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। থানা এলাকাগুলো হচ্ছে, চাদপুর মতলব থানা, গাজীপুর শ্রিপুর, কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানা এবং ডিএমপি খিলগাঁও, ডেমরা থানা। এই সফল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার পর উক্ত প্রতারক চক্রের ০৬ সদস্য গ্রেফতার সহ ২৬ হাজার ডলার, ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, পাসপোর্ট, বিভিন্ন ব্যাংকের একাউন্ট জব্দ করে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশ।

এ ব্যপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মফিজুল ইসলাম (পিপিএম) জানায়, প্রতারক চক্রটি দেশের বিভিন্ন বড় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে তাদের সাথে সক্ষতা গড়ে তুলেন। তারা বিদেশী এনজিও প্রতিষ্ঠানের সদস্য পরিচয় দিয়ে বিদেশী কাল টাকা সাদা করার জন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ঋণ প্রদানের জন্য তাদের ভুয়া এনজিও প্রতিষ্ঠানের সদস্য বানান। পরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদেরকে টাকা/ডলার ডাবল করার যাদু দেখান। টাকা/ডলারের সাথে কাগজ মিশিয়ে স্প্রে করে একটি কসটেপ দ্বারা মোড়ানো কাচের বাক্সে টাকাগুলো রাখেন। চোখের পলকে বাক্স পরিবর্তন করে প্রথমে ৫০ হাজার টাকাকে ১ লাখে রূপান্তরিত করে অবাক করে ও প্রলোব্ধ করেন। পরে মোটা অংকের টাকা অর্থাৎ কোটি কোটি টাকা ডলারে চেইঞ্জ করিয়ে ডলারকে ডাবল করার কথা বলে বাক্স পরিবর্তন করে প্রতারণা পূর্বক টাকা আত্মসাৎ করে উধাও হন। যে বাক্সটিকে তারা জাদুর বাক্স বলে চালিয়ে দেয় বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে।

মামলার ঘটনাটির বিষয়ে জানা যায়, গত ২০ ই জুলাই নারায়ণগঞ্জ গ্র্যান্ড হল রেস্টুরেন্টে বাদী মামুনের সাথে প্রতারক চক্রের সাক্ষাত হয়। সেখানে তার সামনে প্রথমে ৫০ হাজারকে ১ লাখে রূপান্তরিত করে প্রলোব্ধ করে। এরপর গত ২৯ই জুলাই ঢাকাস্থ বারিধারায় বাদীর অফিস কক্ষে ২ কোটি টাকার সমপরিমান ডলারকে ডাবল করার যাদু দেখিয়ে প্রতারণা পূর্বক ডলারগুলো আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হন এই আসামীরা। পরে মামলাটি তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামীদের সনাক্ত পূর্বক গ্রেফতার করেন নারায়ণগঞ্জ ডিবি কর্মকর্তা।

add-content

আরও খবর

পঠিত