জমি দিলো হিন্দু, টাকা দিলো শিখ, দাঁড়িয়ে গেল মসজিদ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : সারা ভারত যখন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় অতিষ্ঠ, চার দিকে জ্বলছে আগুন তখনি এই টাল মাতাল সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির তৈরি করল পাঞ্জাবের মাম গ্রাম। এই গ্রামের মসজিদ বানালেন হিন্দু ও শিখ গ্রামবাসীরা। অনেক আগে থেকেই মাম গ্রামে একটি মন্দির নির্মাণে কাজ করছিলেন নাজিম খান নামে এক মুসলিম শ্রমিক। মন্দির থাকলেও কাছাকাছি কোনো মসজিদ ছিল না। যদিও এই গ্রামে মুসলিম রয়েছেন প্রায় ৪০০ পরিবার।

আর্থিক অনটনের কারণে চাঁদা তুলেও মসজিদ বানানো সম্ভব হচ্ছিল না। প্রায়ই এ নিয়ে দুঃখিত বোধ করতেন নাজিম। একটা কথা নাজিম প্রায়ই ভাবতেন। আর তা হল, তিনি একজন মুসলিম হয়ে হিন্দুদের জন্য মন্দির বানাচ্ছেন অথচ তার গ্রামের মুসলমানদের জন্য নামাজ পড়ার কোন মসজিদ ধারে কাছে নেই। ৪০ বছর বয়সী নাজিম বলছিলেন, আত্মীয়রা বেড়াতে এলে তাদের জন্য বিষয়টা খুব একটা আনন্দের ছিল না, সেখানে চার শো ঘর মুসলিমের বাস। এক দিন কথাটা তিনি তাদের কাছে তুললেন। কিন্তু অর্থের অভাবে মসজিদ বানানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাদের বেশির ভাগই মজুর শ্রেণীর। অন্যদিকে সেখানকার চার হাজার মতো শিখ ও হিন্দুদের অবস্থা তাদের চেয়ে ভালো।

মন্দিরের কাজ যখন শেষ হয়ে আসছে এরকম সময়ে একদিন নাজিম হঠাৎ এক কাজ করে বসলেন। মন্দিরের তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে বলে বসলেন, “আপনারা হিন্দুরা শীঘ্রই একটা নতুন মন্দির পাবেন। পুরনো একটা মন্দিরও আপনাদের আছে। কিন্তু আমাদের মুসলিমদের জন্য প্রার্থনার কোন যায়গা নেই। একটা মসজিদ বানানোর টাকা বা জমি কিছুই আমাদের নেই। কিছু জমি কি আমাদের দেবেন?” সপ্তাহ-খানেক পর এই প্রশ্নের জবাব পেলেন নাজিম রাজা খান।

মন্দির কর্তৃপক্ষ মসজিদের জন্য নয়শ স্কয়ার ফিট জমি দিয়ে দিলো। এরপর যেই বুদ্ধি সেই কাজ, দুই মাস ধরে নাজিম রাজা ও অন্য শ্রমিকেরা মিলে বানালেন মসজিদ। হিন্দু আর শিখরাও বসে থাকলেন না। তারাও হাত লাগালেন এই মসজিদটি নির্মাণ করার তাগিদে। মসজিদটি এভাবে সকলের সহযোগিতায় আর একক ধর্মের কোন প্রার্থনা স্থল থাকলো না। মসজিদ বানাতে হিন্দুদের জমি আর শিখদের টাকা দেয়া নিয়ে কোন ধর্মের কারো কোন ক্ষোভ নেই সেখানে।

সূত্রঃ বিবিসি অনলাইন

add-content

আরও খবর

পঠিত