নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ) : নারায়ণগঞ্জ বারের সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল এর বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত বিস্তর অভিযোগ দিয়েছেন জয়নাল গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন। বৃহস্পতিবার ( ১৯ মার্চ ) এ অভিযোগ পত্রে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে প্রতিকার চেয়েছেন তিনি। এছাড়াও বারের সভাপতি থাকাকালিন সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে ব্যাংক হইতে তার ক্রয়কৃত বৈধ সম্পত্তিকে অনৈতিকভাবে আত্মসাৎ করার নীল নকশা একেছে এড.জুযেল, এমন দাবী করেন জয়নাল আবেদীন।
তবে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এটাকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বারের সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল। তিনি বলেছেন, দেশের এমন একটি সময়ে জয়নাল আবেদীন জাতির কথা বিবেচনা না করে অপপ্রচার শুরু করেছে। তাই এমন সময় আমি কিছু বলতে চাই না। অবস্থা শিথিল হলে জানতে পারবেন। তাছাড়া ওই জমিটি আমার পিতার নামে মিউটিশনও করা, যেখানে আমি সহ আমার অন্যান্য ভাই বোনেরাও দাবীদার। তিনি যদি দাবীদার হয়ে থাকে আবারো আদালতে শরনাপন্ন হতে পারে। আমি এর আগেও মামলায় রায় পেয়েছি। সে তো ভালো মানুষও নয়, তা না হলে একজনের বিরুদ্ধে এতো মামলা থাকে কিভাবে?
লিখিত অভিযোগে জয়নাল আবেদীন উল্লেখ করেছেন, পূবালী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখা, নারায়ণগঞ্জ গফুর জুট বেলিং হিসাব নং – সি সি ৪৩ (৪) ইউসুফ এন্ড কোম্পানী জুট লিমিটেড হিসাব নং সি সি ৮২ এই ঋণের বিপরীতে তফসিল ভূক্ত সম্পত্তি সহ অত্র খতিয়ানের অ-নালিশা সম্পত্তি ১৯৭৮ সালে বন্ধক রাখিয়া ঋণ গ্রহন করেন। অত:পর আব্দুল গফুর গং নালিশা ভূমিতে পূবালী ব্যাংকের নামীয় সাইনবোর্ড টানাইয়া ভোগ দখলে বিদ্যমান থাকে। পরবর্তী সময়ে আব্দুল গফুর গং ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের ঋন আদায়ের জন্য নারায়ণগঞ্জের বিজ্ঞ সাব-জজ আদালতে নারায়ণগঞ্জ দে: ১১২/১৯৮৬ নং মোকদ্দমায় বিগত ০৭/০৯/১৯৮৭ ইং তারিখে রায় ও বিগত ২৩/০৯/১৯৮৭ ইং তারিখে ডিক্রী প্রাপ্ত হয় এবং পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ব্যাংকের বন্ধকী ঋন পরিশোধের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আব্দুল গফুর গং দের ওয়ারিশগন তফসিল ভূক্ত সহ অন্যান্য অনালিশা খতিয়ানের এবং অনালিশা দাগের সম্পত্তি ব্যাংকের ঋন পরিশোধের জন্য বিগত ২০/০৭/২০০৫ ইং তারিখে আলহাজ¦ মো. জয়নাল আবেদীনের সাথে চুক্তিপত্র দলিল সহি সম্পাদন করিয়া চুক্তিপত্রে আবদ্ধ হন এবং সেমতে পূবালী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখায় বিগত ২৫/০৮/২০০৫ ইং তিন পক্ষের মধ্যে এক সমঝোতার মাধ্যমে চুক্তিপত্র মোতাবেক জয়নাল আবেদীন ব্যাংকের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করিয়া দেন এবং চুক্তিপত্র মোতাবেক ব্যাংক হইতে অবমুক্তকৃত সম্পত্তির মালিক হইয়া ভোগ দখলকার নিয়ত হন। সেই সাথে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীনকে দায় মুক্তি সার্টিফিকেট প্রদান করে।
অভিযোগ পত্রে জয়নাল আবেদীন আরো উল্লেখ করেন যে, আব্দুল গফুর মোল্লাগংদের ওয়ারিশগন ২৪/০৫/২০০৬ ইং এবং ২৫/০৫/২০০৬ ইং তারিখে ৩৬১৯ নং বায়নাপত্র ও ৩৬২০ নং আমমোক্তার নামা দলিল সম্পাদন পূর্বক রেজিষ্ট্রি করিয়া দেয় এবং পূবালী ব্যাংক লিঃ উর্ধতন কর্মকর্তা গন যথা পূবালী ব্যাংক লিঃ নারায়ণগঞ্জ শাখার তৎকালীন মহা-ব্যবস্থাপক ফজলুল হক, সহকারী মহা- ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান ও সিনিয়র অফিসার মো.তোফাজুল হোসেন সাক্ষী হিসাবে উক্ত দলিলে সাক্ষর প্রদান করেন। শুধু তাই নয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবং আব্দুল গফুরগং দের ওয়ারিশগন যৌথ ভাবে অত্র তফসিল ভূক্ত ৩১ শতাংশ সম্পত্তি সহ অপরাপর ভূমি সরজমিনে স্থানীয় সার্ভেয়ার দ্বারা মাপঝোপ করিয়া নিষকন্টক ভূমির দখল সত্ত¡ আলহ¦াজ জয়নাল আবেদীন কে বুঝাইয়া দেন । পরবর্তিতে জয়নাল আবেদীন তাহার পুত্র নাদিম হোসেনের বরাবরে ৯৬৩২ ও ১০১১৫ নং সাবকবলা মূলে বিগত ১২/০৭/২০১২ ও ২৩/০৭/২০১২ইং তারিখে হস্তান্তর করেন।
এমতাবস্থায় এডভোকেট জুয়েল পিতা মৃত ফোরকান মোল্লা সাং- কলেজ রোড, থানা ফতুল্লা , জেলা নারায়ণগঞ্জ তাহার পিতার নামে উক্ত সম্পত্তি হইতে ৪ শতাংশ সম্পত্তি বিগত ০৮/০৮/১৯৯৯ ইং তারিখে একটি দলিল সৃজন করিয়া উক্ত সম্পত্তি দাবী করে এমন অবস্থায় জয়নাল আবেদীন এড, জুয়েলকে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং উভয় পক্ষের এডভোকেট রাখিয়া দলিলপত্র পর্যালোচনার মাধ্যমে সত্য উদঘাটনের প্রস্তাব করিলে এড. জুয়েল সেই প্রস্তাব রাজী না হয়ে জয়নাল আবেদীনকে বিভিন্ন রকম মামলা মোকদ্দমার মাধ্যমে শায়েস্তা করার হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনার পর এড, জুয়েল আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসাবে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজির সি. আর ১৫০/১৫ নং মামলা দায়ের করে। পরবর্তিতে এড. জুয়েল জয়নাল আবেদীনকে কোট হাজতের কাষ্টোডিতে রাখিয়া ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বল প্রয়োগ করিয়া তার তৈরী কৃত আপোষ নামায় সহি স্বাক্ষর করিতে বাধ্য করেন।
আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন অভিযোগ পত্রে জানান , ভূমি আত্মসাতকারী ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারী এড, জুয়েল তাহার বিরুদ্ধে সম্পূর্ন মিথ্যা ঘটনা সাজাইয়া এড, জুয়েলের ছোট ভাই রাশেদ ফেরদৌসকে ভিকটিম সাজাইয়া ফতুল্লা থানায় আরো একটি মামলা ৭৫(০৩)১৫ রুজু করিয়া তাহাকে আর্থিক এবং ব্যবসায়িক এবং সামাজিক ভাবে অযথা হয়রানির শিকার হওয়ান। উক্ত মামলার এজাহারে কাহারো নাম সুনিদির্ষ্টভাবে উল্লেখ না থাকায় এবং জয়নাল আবেদীন কর্তৃক অপরাধ সংঘটনের সুনির্দ্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমান না পাওয়ায় উক্ত মামলার চুড়ান্ত রিপোট গত ২৩/১১/২০১৬ ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। কিন্তু পরবর্তিতে এড, জুয়েল গোপনে নারাজি পত্র দিয়া অধিকতর তদন্তের আদেশ নিয়া নারায়ণগঞ্জ জেলার গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করিয়া মূল এজাহারে অজ্ঞাত নামা আসামী থাকলেও জয়নালের সাথে সম্পত্তির র্পূব শত্রুতার জের ধরে সম্পূর্ন মনগড়া ও কাগুজিক তদন্তক্রমে নিরপেক্ষ সাক্ষ্য প্রমান ব্যতিত জয়নাল আবেদীন ও অন্যান্য ৫ জনকে পলাতক দেখাইয়া চার্জশিট ভূত্ত করিয়া ক্ষমতার প্রভাব খাটাইয়া অভিযোগ পত্র দাখিল করে।
এসব বিস্তর অভিযোগ উল্লেখ করে এডভোকেট জুয়েল এর দ্বারা সম্পত্তি আত্মসাত সহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা মোকদ্দমার বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে উভয় পক্ষের দলিল পত্রাদি যাচাই করিয়া প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন জয়নাল আবেদীন।