নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রির্পেটার ) : রূপগঞ্জে ভূয়া র্যাব প্রতারক মো. জয়নাল আবেদীন (২৭), মো. নাজমুল হোসেন (২৭) ও মোস্তাফিজুর রহমান (২৯) কে বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ দল। ২৪ আগস্ট শনিবার দিবাগত রাতে রূপগঞ্জ থানাধীন রূপসী এলাকা থেকে তাদেকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় গ্রেফতার আসামীদের কাছ থেকে র্যাবের ইউনিফরম পরিহিত ছবি (এডিটিং করা)-২টি, বাংলাদেশ র্যাব লেখা ও র্যাবের মনোগ্রাম সম্বলিত জ্যাকেট-১টি, র্যাব সদর দপ্তরের সীল ও অফিসারদের ভূয়া স্বাক্ষর সম্বলিত নোটিশ-৭টি, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা অফিসার, ডিউটি অফিসার ও তদন্তকারী অফিসার নামীয় সীল-৪টি, বিজিবির আইডি কার্ড-১টি, বিজিবি ইউনিফরম-১ সেট, ল্যাপটপ-১টি, প্রিন্টার-১টি, মোবাইল-১টি ও সীম-১৪টি জব্দ করা হয়।
২৫ আগস্ট রবিবার র্যাব-১১ এর উপ-পরিচালক তালুকদার নাজমুছ সাকিব এক সংবাদ বিবৃতে জানান, ভূয়া র্যাব প্রতারক চক্রের দ্বারা প্রতারিত ভূক্তভোগী একজন এর নিকট হতে প্রাপ্ত একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়। এতে দেখা যায় যে উক্ত প্রতারক চক্রটি র্যাব সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদের সীলমোহর ব্যবহার করে নিজেদের তৈরীকৃত ১টি ভূয়া নোটিশ প্রেরণ করে। নোটিশনামায় প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে উৎকোচ প্রদানপূর্বক উক্ত অভিযোগ থেকে অব্যাহতি মিলবে এমন আশ্বাস দেয়। অন্যথায় গ্রেফতার করার ভয় দেখানো হয়। এ প্রেক্ষিতে গত ২৪ আগস্ট শনিবার দিবাগত রাতে উৎকোচ গ্রহণ করার সময় উৎ পেতে থাকা র্যাব সদস্য কর্তৃক তাদের নাতে-নাতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় গ্রেফতারকৃত সবার বাড়ি বর্তমান ঠিকানা গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এলাকায়।
তিনি আরো জানান, প্রতারক চক্রের প্রধান আসামী মো. জয়নাল আবেদীন ইতোপূর্বে বিজিবিতে চাকুরী করত। বিজিবিতে চাকুরীরত অবস্থায় সে ২০১৭ সালে বিজিবি থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে একটি প্রতারক চক্র সংগঠিত হয়। সে দীর্ঘদিন ধরে বিজিবিতে চাকুরী দেয়ার নাম করে অনেক লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। তারই নেতৃত্বে উক্ত প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর, ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আর্থিকভাবে সম্পদশালী লোকদেরকে র্যাবের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার নামে ও মিথ্যা মামলার ভয়-ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
র্যাব-১১ এর উপ-পরিচালক তালুকদার নাজমুছ সাকিব জানান, উক্ত প্রতারক চক্র র্যাব সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদবীর নামীয় সীল তৈরী করত: তাদের প্রস্তুত করা বিভিন্ন ভূয়া নোটিশে নিজেরাই স্বাক্ষর করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। এক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য ভূয়া নোটিশগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পৌঁছানো হত। সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা জন্য বিজিবির ইফনিফরম পরিহিত ছবি ও র্যাব সদস্যের ছবি এডিটিং করে র্যাবের ইউনিফরম পরিহিত ভূয়া ছবি তৈরী করে তারা প্রদর্শন করত। উক্ত প্রতারক চক্র মানুষের শ্রেণী বুঝে কখনো র্যাবের এসআই এবং কখনো ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয় দিয়ে আসছিল। এভাবে তারা র্যাবের পরিচয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিদেরকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।