নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিনিধি ) : ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমেন সিকদার। পদবলে দলের বিভিন্ন কর্মসূচীতেও তাকে অংশ নিতে দেখা যায়। সে হিসেবে তিনি দলের গুনগান গাইবে। আর দলীয় স্লোগান দিবে এটই স্বাভাবিক। তবে এই নেতার মুখে বিরোধী দল বিএনপির স্লোগানে রীতিমত সমালোচনার ঝড় বইছে। যা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এখন ভাইরাল হয়ে গেছে। রবিবার (৩রা অক্টোবর) দিনভর বিভিন্ন ব্যক্তির আইডি থেকে শেয়ারও হয়েছে। আর সেখানে সাধারণ মানুষের সমালোচিত মন্তব্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কাশিপুর এলাকায় একটি সংগঠন নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর বর্বর ইসরাইলী আগ্রাসন এবং শিশু ও নারী সহ নির্বিচারে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের উপর নারকীয় হত্যাকান্ড ও হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করে। যেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা মোমেন সিকদারসহ আওয়ামীলীগ নেতা শহীদুল্লাহ, শ্রমিক নেতা মাহাবুব রহমান ইসমাঈল আরো অনেকেই। সেখানে তিনি তার বক্তব্য শেষে বলেন খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। আর সে বক্তব্যের ভিডিওটি এখন নেটিজেনরা ফেসবুকে ছেড়ে দিয়ে তার সাথেই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার একটি বক্তব্যের অংশ বিশেষ যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে তিনিও বক্তব্যে বলছেন আল্লাহ হাফেজ-বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
শেয়ার হওয়া ভিডিওতে বেশ কয়েকটি মন্তব্যে লেখা হয়েছে, একজন লিখেছেন এসব রাজনীতির নামে মনে হয় ভন্ডামী।রিয়াজ উদ্দিন নামে একজন লিখেছেন মোমেন সাহেবের মত ব্যক্তি ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বিম্পির স্লোগান কখনো ভুলে আসতে পারে না। উনি মনে হয় বাংলাদেশ জিন্দবাদ অন্তরে পোষন করেন। সৈকত নামে একজন ইউজার লিখেছেন, আরে এরা কারা, বিএনপির ভোটের জন্য এত নিচে নামছে উনি।কোন লাভ নাই মুখোশ খুলে গেছে, সত্য কখনো চাপা থাকে না।এমন অসংখ্য মন্তব্যই বিভিন্ন পোস্টে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমেন সিকদার বলেন, আমি ছোট থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত। আমার পুরো পরিবার আওয়ামীলীগ করে। ছেলে ছাত্রলীগ নেতা। ওইটা যেটা হয়েছে সেটা বেখেয়ালীতে হয়ে গেছে। আর এটা হয়তো এখন পোলাপান ফেসবুকে ছেড়ে দুষ্টুমী করছে।
এ প্রসঙ্গে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী বলেন, আমার জানা মতে মোমেন আমাদের থানা আওয়ামীলীগের পদে রয়েছে। এখনো যেহেতু কোন পদত্যাগ করেনি। যদি অন্যদলের স্লোগান দেয় অবশ্যই সে ভুল করেছে। এখন তিনি কি আবার অন্য কোন দলের সাথে অনুপ্রাণিত হয়েছে কিনা তা বলতে পারছিনা।
উল্লেখ্য, গেল কয়েকবছর আগে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সুচিন্তাা ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন আয়োজিত সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, যারা জয় বাংলা না বলে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে, তারা পাকিস্তানের এজেন্ট। কারণ হিসেবে তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, ‘তাদের বিরোধী দল বলব না, কারণ তারা সংসদে নেই। তারা জয় বাংলা বলে না, বলে -জিন্দাবাদ। যেটা উর্দু শব্দ। বাংলা ভাষায় জিন্দাবাদ বলে কোনো শব্দ নেই। ভাষা আন্দোলনে আমরা উর্দুর বিরোধিতা করেছিলাম। এখনো তারা সেটাই ব্যবহার করে। যারা জিন্দাবাদ বলে, তারা বাঙালি নয়, পাকিস্তানের এজেন্ট। তারা দেশ থেকে চলে যায় না কেন? যারা এ দেশে থেকে “জিন্দাবাদ” বলে, তাদের পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত।
এছাড়াও শেরে বাংলা নগরে বাণিজ্যমেলা মাঠে -বাংলাদেশ জিন্দাবাদ- স্লোগান দেওয়ায় একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার ভালো লাগেনি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হলো, সেই দিন থেকে -জয় বাংলা- চট করে -বাংলাদেশ জিন্দাবাদ- হয়ে গেল। কথাটা ভালো না-ও লাগতে পারে, এটাই বাস্তবতা।’ আর তাতেই চটে উঠেছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মন্সি।