নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদ দাতা ) : শহরের লাইফ জেনারেল হাসপাতালে বাচ্চা প্রসূতির জন্য ভর্তি হয়েছিলেন সালমা (ছদ্মনাম)। অস্ত্রোপচারের পরে চিকিৎসক প্রয়োজনীয় ঔষধও দিয়েছেন। কিন্তু মাঝেমধ্যেই রোগীর ব্যাথা ও অস্বস্তিকর লাগলে চিকিৎসককে জানাতে নার্স কিংবা আয়াদের সহযোগীতা চাইতেন রোগী ও স্বজনরা। তবে এতে অতিষ্ট বোধ করতেন কর্তব্যরত নার্স কিংবা আয়ারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ভুক্তভোগী রোগী জানায়, কর্তব্যরত নার্সের ইনজেকশন পুশ থেকে একটি খারাপ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন তিনি। তাদের ওষুধ সম্পর্কে ঠিক মতো ধারণা আছে কিনা এতেও সন্দেহ লাগছিল। তাই ঔষধ দিলেও চিকিৎসকের সাথে কথা হয়েছে কিনা। কিংবা প্রসূতির রোগীর সেই চিকিৎসক দিয়েছে কিনা তা জানতে চাইলেই বাকবিতন্ডা বাধে।
তাদের দাবী, ঔষধ চাইলে নার্সরা অন্য রোগীদের কাছ থেকে নিয়ে দিতো। এটা দেখার পর বলতে গেলে হাসপাতালের নার্স ও আয়া সুলতানা রোগী ও তার সাথে থাকা স্বজনদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। আর ঔষধ দিচ্ছি দেবো বলে অবহেলা করে। পরে নিজেরাই বাহির থেকে ঔষধ কিনে নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা বিভিন্ন প্রকার অজুহাত দেখায়।
রোগীর স্বজনরা আরো জানায়, শহরের জাকির সুপার মার্কেট ভবনের ২য় তলায় অবস্থিত ওই হাসপাতালটিতে গত মাসের শেষদিকে বাচ্চা প্রসবের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়। সেখানে ২৫ হাজার টাকার চুক্তিতে কেবিন, ঔষধসহ সবধরণের সেবা পাবেন রোগী।কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপারেশনের পরে তাদের সাধারণ ওয়ার্ডে থাকতে দেয়। আর এরপর থেকেই আয়াদের বকশিস বাবদ টাকা’র জন্য বারবার রোগী ও স্বজনদের চাপ দিতে থাকে। এ নিয়ে নার্সদের সাথেও ঝগড়া হয়। যা গিয়ে তুই তুইকার অবস্থায় গিয়ে ঠেকে। এমন আচরণের পর বাধ্য হয়েই বকশিস দিয়ে পরেরদিন রিলিজ হয়ে বাসায় চলে যেতে বাধ্য হয় রোগীর স্বজনরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাইফ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফাতেমা শিরিন জানান, আমরা আসলে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করি। নার্স-আয়াদের এসব অভিযোগ আমরা শুনি। কিন্তু রোগী যদি সাহস করে আমাদেরকে জানায় তাহলে আমরা কিছু করতে পারি। আর তাছাড়া হাসপাতালে নার্স-আয়ারা আমাদের সামনে তো আর করে না। তাই আমরা কিছু বলতেও পারিনা। তবে যেহেতু জানিয়েছেন অবশ্যই তারা যেন খারাপ ব্যবহার না করে এবং বকশিসের জন্য কোনরকম চেষ্টা না করে তা আমরা দেখবো।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য জানতে হাসপাতালের মালিক মো. খোকনের সাথে দেখা করার চেষ্টা করেছিল প্রতিবেদক। তবে তিনি ছিলেন না। পরবর্তিতে ডা. ফাতেমা শিরিনের কাছে মালিক মো. খোকনের ব্যবহৃত মুঠোফোনের নাম্বার চাইলে তিনি বলেন, আর কাউকে জানানো লাগবেনা। আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো।