নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ) : নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কামতাল এলাকায় অবস্থিত রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান টোটাল ফ্যাশন লিমিটেড এর শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে বর্তমানে খুলনায় অবস্থানরত নীট গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ এর সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের জরুরি হস্তক্ষেপে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রনে আসে। আগামী ২৩ই মে মধ্যে নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশ ও কলকারখানা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা চুড়ান্ত তদন্ত করে একটি তদন্ত রিপোর্ট বিকেএমইএ এর সভাপতির কাছে প্রদান করবেন। তদন্ত শেষ না সময় পর্যন্ত কারখানাটি আপাতত শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা অনুযায়ী সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
২০ই মে বৃহস্পতিবার সকালের ঈদের ছুটির পর কারখানাটি খোলার সময় কিছু সংখ্যক শ্রমিকের বিভ্রান্তি ও উস্কানিতে শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে বলে বিকেএমইএ থেকে প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঈদ ছুটি পরবর্তী কারখানা খোলার প্রথম দিনে কিছুসংখ্যক শ্রমিক বিভ্রান্তি ও উস্কানি ছড়িয়ে এক শ্রমঅসন্তোষ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বিগত কয়েক বছর ধরেই ১২/১৩জন শ্রমিকের একটি ছোট গ্রæপ ওই কারখানাকে নানা ভাবে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে আসছিল। অথচ গত ঈদুল ফিতরের পূর্বে উক্ত কারখানার মালিক শ্রমিকের আলোচনা সাপেক্ষে উক্ত কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের যত রকম সুযোগ সুবিধা রয়েছে তা প্রদানের মাধ্যমে কারখানায় ঈদের ছুটি দেয়া হয়। কিন্তু আগের মতই ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষে সেই গ্রæপটিই আবার ঐ কারখানার মোট ১৩০০ শ্রমিকের মধ্যে আনুমানিক শতাধিক শ্রমিক নিয়ে ঈদ পরবর্তী কারখানা খোলার দিনই উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মারধর করে, অফিসে ভাংচুর করে এবং কারখানার মালামালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। যা কারখানার বিদ্যমান সিসি টিভি ফুটেজে দৃশ্যমান হয়েছে।
উক্ত কারখানার শ্রম বিশৃংখলার বিষয়টি ব্যবসায়িক কাজে খুলনায় অবস্থানরত বিকেএমইএ সভাপতি এ.কে.এম সেলিম ওসমান, এমপি অবগত হবার পর জেলা পুলিশ সুপার জাহিদুল হক, শিল্প পুলিশ-৪ এর পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিপক কুমার সাহা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার, স্থানীয় চেয়ারম্যান মাসুম আহমেদ ও স্থানীয় অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সাথে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা করেন এবং দ্রুত সুরাহার নির্দেশনা প্রদান করেন।
নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো টোটাল ফ্যাশন লি: এর শ্রম অসন্তোষ নিরসনে কাজ শুরু করেন। ঘটনার পর্যালোচনায় নিয়ে পরবর্তীতে উক্ত কারাখানায় কে বা কাদের উস্কানিতে এ ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে তা চিহ্নিত করনের লক্ষে আগামী ২৩ মের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশ ও কলকারখানা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্তৃক চুড়ান্ত তদন্ত করে একটি তদন্ত রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের এমপি নিকট দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য যে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত টোটাল ফ্যাশন্স লিঃ শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা মোতাবেক সাময়িক বন্ধ থাকবে।
নির্দেশনা মোতাবেক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে দ্রæত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করায়, জেলা পুলিশ সুপার শিল্প পুলিশ-৪ এর পুলিশ সুপার, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সকলে প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এমপি সেলিম ওসমান। একইসাথে তিনি নারায়ণগঞ্জ অঞ্চল তথা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেসকল শ্রমিক নেতৃবৃন্দ কাজ করছেন তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। কারণ সকলের সহযোগিতায় এই প্রথম বারের মত দেশের আরএমজি সেক্টরে ঈদ পূর্ববর্তী সময়ে কোন শ্রমিক অসন্তোষ দানা বাধতে পারেনি।
উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাপী করোণা মহামারি পরিস্থিতিতে রপ্তানি আদেশ কমে যাওয়ায় শিল্প উদ্যোক্তাদের কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় এ.কে.এম সেলিম ওসমান, এমপি আগামী কুরবানীর ঈদ পর্যন্ত মালিক শ্রমিক সকল পক্ষকে ধৈর্য ধারনের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলার অনুরোধ জানিয়েছেন। কেননা রপ্তানিমুখি আরএমজি শিল্পের উপরেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ তরান্বিত হয়ে থাকে। এই শিল্পে কোন অচলাবস্থা তৈরী হলে তা দেশের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারন হয়ে দাড়াবে।