নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় রাফিত আল হাসান নামে মুন্সিগঞ্জগামী একটি লঞ্চ অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়ার ঘটনায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ৷ উদ্ধারের পর ওই নারীকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নেওয়া হয় ৷ নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি শাহ জামান। তবে নিহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এরআগে ৪ঠা এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর চর সৈয়দপুর এলাকার ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা ৬টার কিছু সময় পরে লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জের দিকে রওনা দেয়। একটি মালবাহী একটি মালবাহী কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এটি ডুবে যায় বলে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন জানান, ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমাদের কার্যক্রম চলছে।
এদিকে নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। এরমধ্যে মহারানী, শুনিতা সাহা তার দুই ছেলে অনিক সাহা ও বিকাশ সাহা, প্রতিমা, সালাম বেগম ও সোলেমানের নামে ৭ জনের নাম জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল আলম জানান, রাবিত আল হাসান নামে যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটে। চরসৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর কাছাকাছি স্থানে একটি লাইটার জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়। নারায়ণগঞ্জ থেকে যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি মুন্সিগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। ডুবে যাওয়া লঞ্চটির মালিকের নাম আলাল হোসেন৷ তিনি মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা।
লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল সংবাদিকদের জানান, লঞ্চটি সন্ধ্যা ৬টার কিছু সময় পর নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যায়। পথিমধ্যে ঝড়ের কবলে পড়লে এটি দুর্ঘটনার শিকায় হয় এবং অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়।
লঞ্চের যাত্রী মুন্সিগঞ্জে অধিবাসী অটো চালক দিপু জানান জানান, বড় একটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে লঞ্চটি ডুবে যায়৷ তিনি সাতরে তীরে ফিরতে পেরেছেন৷
নদী বন্দর নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক মোবারক হোসেন জানান, ৪৩ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের দিকে রওয়ানা হয়। চর সৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর কাছাকাছি স্থানে অপর একটি জাহাজের ধাক্কায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনাস্থলে পুলিশ, নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। কাল বৈশাখী ঝড় ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চটিতে আনুমানিক ৫০/৬০ জন যাত্রী ছিল।
এদিকে লঞ্চ ডুবির খবর পেয়ে যাত্রীদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাদের আহাজারিতে সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠে। ওদিকে লঞ্চ ডুবির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো.মোস্তাইন বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, সদর উপজেলার ইউএনও নাহিদা বারিক প্রমুখ।